ইরানের পুরনো গৌরবই আবার নতুন রূপে ফিরে এসেছে ফার্সের রাজধানী শিরাজের ব্যস্ত সড়কে।
ইতিহাস ও গৌরবের সম্মিলনে তৈরি এই পোস্টার যেন নেতানিয়াহুর অবনমন ও ইরানের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ঘোড়ায় বসা প্রাচীন পারস্যের বীর সম্রাট ‘শাপুর প্রথম’। তার চোখে বিজয়ের তৃপ্ত আত্ববিশ্বাস।
ঠিক তার সামনেই হাঁটু গেড়ে নতজানু হয়ে আছেন আধুনিক সময়ের বিতর্কিত নেতা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এবারই শুধু নয়, ইরানিদের কাছে ‘নেতানিয়াহুর অসহায় আত্মসমর্পণ’ ইসরাইলের অন্তত কালের পরাজয়! ঘোড়ার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও।
ছবিটি প্রতীকী হলেও ইরানের বিজয়গাথার এ দৃশ্য নতুন নয়। বরং হাজার বছর আগের প্রাচীন ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি। ইসরাইল নামের কোনো ভ্রুণ-অস্তিত্বও ছিল না তখন পৃথিবীর গর্ভে। তৃতীয় শতাব্দীতে পারস্য সম্রাট ‘শাপুর প্রথম’ রোমান সম্রাট ভ্যালেরিয়ানকে যুদ্ধে হারিয়ে বন্দি করেন।
রোমান সাম্রাজ্যের ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের সেই দৃশ্য তখনই খোদাই করে রাখা হয় ইরানের ফার্স প্রদেশের প্রায় ১২ কিমি. উত্তর-পশ্চিমের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ‘নকশ-ই রোস্তম’র পাথরে।
বিজয়ের সেই স্মৃতিকে চিরস্থায়ী করতে সম্রাট শাপুর প্রথম নির্দেশেই তখন এটি খোদাই করা হয়। যেখানে দেখা যায়, সম্রাট শাপুর তার ঘোড়ায় বসে আছেন আর সামনে নতজানু হয়ে ভ্যালেরিয়ান আত্মসমর্পণ করছেন।
আজ, সেই গৌরবই আবার নতুন রূপে ফিরে এসেছে ফার্সের রাজধানী শিরাজের ব্যস্ত সড়কে। টানা ১২ দিনের (১৩ জুন-২৪ জুন) যুদ্ধজয়ের পর ইরানের অস্থিমজ্জায় মিশে থাকা পুরাতন সেই অতীতকেই যেন ইসরাইলের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ফার্সবাসী।
পারস্য সাম্রাজ্যের স্বর্ণালি সেই ইতহাস আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল ইসরাইলের মুনিব রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও।
ইতিহাস ও গৌরবের সম্মিলনে তৈরি এই পোস্টার যেন নেতানিয়াহুর অবনমন ও ইরানের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
২৫৯-২৬০ খ্রিষ্টাব্দে এডেসার যুদ্ধে সম্রাট শাপুর প্রথম রোমান বাহিনীকে ভয়ংকরভাবে পরাজিত করেন। যুদ্ধে ভ্যালেরিয়ান আত্মসমর্পণ করেন এবং শাপুর প্রথমের হাতে বন্দি হন। রোমান ইতিহাসে প্রথমবার কোনো সম্রাট শত্রুপক্ষের কাছে জীবিত অবস্থায় বন্দি হন।
ইরানের পুরনো গৌরবই আবার নতুন রূপে ফিরে এসেছে ফার্সের রাজধানী শিরাজের ব্যস্ত সড়কে
Leave a Reply