1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ অপরাহ্ন

পৌষেই মাঘের শীত, কাঁপছে উত্তরাঞ্চল

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১

‘পৌষের শীত মোষের গায়ে আর মাঘের শীত বাঘের গায়ে’। অর্থাৎ মাঘের হিমে যেন বাঘ মামাও কাবু। বাংলার সেই প্রবাদ খানিকটা উল্টে গেছে পৌষের শীতেই। দেশের উত্তর জনপদে এবার পৌষ মাসেই কাঁপছে বাঘ। দক্ষিণে যদিও আছে-নেই লুকচুরির খেলায় মেতেছে শীত। উত্তরের বিভাগ রংপুর অঞ্চলে কনকনে হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। গতকাল বুধবার দিনভর দেখা মেলেনি সুয্যি মামার। ভোরের দিকে ঝরেছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢেকেছিল রাস্তাঘাট। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন।

রংপুর প্রতিনিধি ওয়াদুদ আলী জানান, ব্যস্ততম রংপুর মহানগরীতে যানবাহন চলাচল করেছে সীমিত আকারে। ঘন কুয়াশাপাত ও কনকনে হিমেল হাওয়া এবং সূর্যের দেখা না মেলায় সৃষ্ট হাড়কাঁপানো শীতে মানুষের পাশাপাশি কাবু হয়ে পড়েছে গবাদিপশু-পাখিও। বিশেষ করে চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। গতকাল রংপুরে সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। ভরদুপুরেও হাত-মুখ ঢেকে মানুষকে বাইরে চলাচল করতে হচ্ছে। আর বিকাল হতে না হতেই শিরশির ঠান্ডা সুচের মতো ফোটে। হাড়কাঁপানো শীত থেকে বাঁচতে মানুষ তাদের শেষ গরমকাপড়টিও জড়িয়েছে শরীরে। রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ কামরুল হাসান বলেন, ‘শুধু রংপুরেই নয়, বৃহত্তর উত্তরাঞ্চলে কোথাও

আজ সূর্য দেখা যায়নি। পৌষের এ সময়টাতে শীত বেশি থাকে এবং তাপমাত্রা কমে যায়। হিমেল হাওয়া এবং তাপমাত্রা অনান্য বারের তুলনায় সামান্য বেশি। আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদক (কুড়িগ্রাম) মোল্লা হারুন উর রশীদ জানান, জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন মেঘে ঢেকে আছে পুরো অঞ্চল। দিনভর সুর্যের দেখা মেলেনি। সেই সঙ্গে বইছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। তাতে কাহিল হয়ে পড়েছে শহর ও গ্রামীণ জনপদের মানুষ। বিশেষ করে এসব এলাকার শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। প্রতিদিন হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর ভিড়। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হতে হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধদের। জেলা আবহওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানায়, বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণে আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও কমে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে।

দিনাজপুর প্রতিনিধি রতন সিং জানান, বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলের হিমালয়ের পাদদেশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও উত্তরের ঝিরিঝিরি হাওয়ার কারণে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। দরিদ্র ও ছিন্নমূল জনসাধারণ গরমকাপড়ের চাহিদায় বৃত্তবানদের কাছে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হচ্ছে কম্বল ও শিশুদের পোশাক। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, বুধবার ভোরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। সকালে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে। আগামী কদিন শীতের প্রকোপ বাড়বে উত্তরাঞ্চলে।

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি এসকে দোয়েল জানান, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ও ঝিরিঝিরি বাতাসে তীব্র শীতে কাবু দেশের উত্তর জনপদ সীমান্তঘেঁষা তেঁতুলিয়ার আপামর মানুষ। মঙ্গলবার রাত থেকেই এমন পরিস্থিতি। আবহাওয়ার রেকর্ডে তাপমাত্রা ওঠানামা করলেও ঠা-া বাতাসের কারণে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। গতকাল সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারাদিনই দেখা মেলেনি সূর্যের। সবচেয়ে বিপাকে নিম্ন আয়ের প্রান্তিক জনপদের মানুষগুলো। শীত নিবারণে খড়-কুটোতে জ্বালানো হচ্ছে আগুন। হাটবাজারগুলোতেও বন্ধ থাকতে দেখা গেছে বহু দোকানপাট। তবে জীবিকার তাগিদে এ কনকনে শীতের মধ্যেই সীমান্ত নদী মহানন্দায় পাথর তুলতে দেখা গেছে শতশত শ্রমিককে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গত ১০ দিন ধরেই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-৯-এর মধ্যে রেকর্ড হচ্ছে এ অঞ্চলে। তবে বুধবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার রাত থেকে হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে প্রবাহিত পূবালী ঠান্ডা বাতাস প্রতিঘণ্টায় ৪ থেকে ৫ নটিক্যাল মাইল বেগে বইছে। এ কারণেই তীব্র ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এর তীব্রতা আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com