তথ্য গোপন করে পরীক্ষা দেওয়ায় নার্স নিয়োগে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যোগ্যতা না থাকলেও চাকরি পরীক্ষায় পাশ করেছে প্রায় দুই হাজার ৩৫০ জন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মেধাক্রম অনুসারে যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ দিলে কোনো জটিলতা হতো না। যারা যোগ্য তাদের মূল্যায়ন না করে অযোগ্যদের মূল্যায়িত করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার তথ্য গোপন করে (নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত না হয়েও) বিপিএসসির সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব, পিএসসির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত ওই আবেদনে লিখিত পরীক্ষয় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের ফল বাতিল করে পরবর্তী মেধাক্রম অনুসারে যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ প্রদানের দাবিও জানানো হয়েছে।
আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ১ মার্চ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) ‘সিনিয়র স্টাফ নার্স’ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ ছিল যে, ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রার্থীকে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে (প্রমাণপত্র সংযুক্ত)। কিন্তু আবেদনের সর্বশেষ তারিখ গত বছরের ১৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের নিবন্ধিত না হয়েও অনেক পরীক্ষার্থী আবেদন করে এবং প্রথমে প্রিলিমিনারি ও সর্বশেষ চলতি বছরের ২৯ আগস্ট বিপিএসসির সরাসরি নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষয় উত্তীর্ণ হয়েছে। যা তথ্য গোপন ও আইনের লঙ্ঘনের শামিল। এতে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের নিবন্ধিত অনেক যোগ্য পরীক্ষার্থী বঞ্চিত হয়েছে।
অতএব, উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে আবেদন চলাকালীন যারা নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত ছিল না তাদের সুপারিশকৃত ফল বাতিলপূর্বক পরবর্তী মেধাক্রম অনুযায়ী যোগ্য রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত প্রার্থীদের সুপারিশ করার জন্য জোর আবেদন জানাচ্ছি।
নার্সিং কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত নার্স পূরবী স্বর্ণকার আমাদের সময়কে বলেন, আমার মতো অনেক যোগ্যতা সম্পন্ন নার্স রয়েছে। যারা যোগ্য তাদের মূল্যায়ন না করে অযোগ্যদের মূল্যায়িত করা হচ্ছে। আমরা চাই যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হোক।
গত ৩০ আগস্ট নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৮ হাজার ২৮৮ জন। পিএসসির ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের অধীন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের দশম গ্রেডে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে নিয়োগের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী উল্লেখিত রেজিস্ট্রেশন নম্বরধারী প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
গত বছরের ১ মার্চ আড়াই হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। গত ২৮ জানুয়ারি এ পদের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান বিষয়ে মোট ১০০টি প্রশ্ন ছিল। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে সিনিয়র স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফ ১৬ হাজার টাকা স্কেলে বেতন ও অন্যান্য ভাতা বা সুবিধা পাবেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এমসিকিউর ফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে উত্তীর্ণ হন ১৫ হাজার ২২৮ জন। এর পর উত্তীর্ণ প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে পিএসসির ওয়েবসাইটে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply