টানা বৃষ্টির আভাস ছিল। গত মঙ্গলবার থেকে তা শুরু হলে চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। একদিকে বৃষ্টির পানি, অন্যদিকে কর্ণফুলীর জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগের সীমা নেই নগরবাসীর। বাসাবাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় ডুবে গেছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালও, যেখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের বড় একটি অংশের চিকিৎসা চলছে।
কঠোর লকডাউনে এমনিতেই ঘরবন্দি মানুষ। তার ওপর টানা বর্ষণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ঘরবন্দি মানুষের জীবন কাটছে পানিবন্দি হয়ে। নগরীর হালিশহর, বাকলিয়া, মুরাদপুর, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, কাপাসগোলা, হামজারবাগ, অক্সিজেন, বহদ্দারহাট, চকবাজার, মোহাম্মদপুর, শুলকবহর, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকসহ বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আজও চট্টগ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি এরই মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ নিয়েছে। চট্টগ্রাম আবহাওয়া
অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ধসের শঙ্কা রয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত বহাল রাখা হয়েছে। সাগরে থাকা সব নৌযানকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে টানা বর্ষণে পাহাড়ধসের শঙ্কায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নগরী ও জেলার বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিয়েছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৯২টি পরিবারের ৩১০ জনকে সরিয়ে নিয়ে নগরীর চারটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক। সেখানেই তাদের দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে মাইকিং করা হয়।
Leave a Reply