স্কুলে যোগদানের নির্ধারিত তারিখ আজ রোববারও ক্লাসে যেতে পারছেন না প্রাথমিকে নতুন নিয়োগ পাওয়া ৩৮ জেলার সহকারী শিক্ষক। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের যদিও স্কুলে যোগদানের নির্ধারিত তারিখ আজ। তবে আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) ৩৮ জেলায় নিয়োগকার্যক্রম স্থগিত করায় এসব জেলার কোনো শিক্ষক আজ কাজে যোগ দিতে পারছেন না। তবে যে ৩৮ জেলায় শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত, শিগগিরই তাদের ব্যাপারে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিপিই।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ডিপিই থেকে নতুন সার্কুলার জারি করে দেশের ৩৮ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগকার্যক্রম স্থগিত করা হয়। আদালতে মামলাজনিত কারণে ৩৮ জেলার নিয়োগ কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে বাকি ২৬ জেলায় নির্বাচিত শিক্ষকদের জেলা শিক্ষা অফিসের যোগদানপত্র জমা দিয়ে আগামীকাল সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিনের টানা প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডিপিই সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) খান মো: নুরুল আমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ স্থগিতের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্ব খাতভুক্ত সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ এর ফলাফলে ৬০ শতাংশ নারী কোটা সংরক্ষণ হয়নি উল্লেখ করে হাইকোর্টে ৩৮ জেলায় রিট পিটিশন করা হয়েছে। রিট পিটিশনের আদেশে আদালত আগামী ছয় মাসের জন্য নিয়োগকার্যক্রম স্থগিত করেছেন। ফলে আগের ঘোষণা মতে, আজ রোববার এসব জেলায় যোগদানের বিষয়টিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। একই সাথে মামলাজনিত জটিলতায় এসব জেলায় শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের যোগদান, কর্মশালা ও পদায়ন নির্দেশনা স্থগিত করা হয়েছে। আদালতে বিষয়টি সুরাহার পরে তাদের যোগদান-পদায়নের সময় জানিয়ে দেয়া হবে। এ দিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের গত মাসের ২০-২৫ তারিখের মধ্যে ডাকযোগে নিয়োগপত্র পাঠানো হয়। সেখানে তাদের প্রত্যেককেই ১৬ ফেব্রুয়ারি যোগদান এবং ১৭ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর গত বছরের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ পাঁচজন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, ৫৫ হাজার ২৯৫ জন প্রার্থী পাস করেছেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এসব প্রার্থীর গত বছরের ৬ অক্টোবর থেকে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষা শেষ হলে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য ১৮ হাজার ১৪৭ জন শিক্ষককে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।
Leave a Reply