মঙ্গলবার ভোরের ভারি বর্ষণে গাজীপুর মহানগরীর সার্বিক জীবনযাত্রা থমকে দাঁড়িয়েছে। অফিসগামী মানুষ বাড়িতে আটকে পড়েছে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ নগরীর অধিকাংশ অভ্যন্তরিণ সড়ক প্লাবিত হয়েছে। পানি ঠেলে ধীরগতিতে পরিবহন চলাচলের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজট চলছে। কলকারখানা, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি অনেক মসজিদের ভেতরও বর্ষণের পানি ঢুকেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, বর্ষণের পানিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী অঞ্চলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। টঙ্গী কলেজগেট, বনমালা-সফিউদ্দিন সংযোগস্থল, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর এলাকায় ড্রেন উপচে মহাসড়কের ওপর দিয়ে হাটু পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া মহাসড়কের বাসন ভোগড়া বাইপাস মোড় ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানজট চলছে। নগরীর টঙ্গী-কালীগঞ্জ-নরসিংদী সড়কের মিরের বাজার এলাকাও প্লাবিত হয়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
টঙ্গী সরকারি কলেজ, সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজ, পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজসহ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিচ তলা প্লাবিত হয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়ক ছাড়াও নগরির অধিকাংশ অভ্যন্তরিণ সড়ক ডুবে গেছে। মঙ্গলবার বর্ষণের পানির কারণে টঙ্গী পূর্ব থানার ভেতর থেকে কোন প্রাইভেটকার বের হতে পারেনি এবং থানার ভেতর যেতেও পারেনি। চারদিকে পানিবেষ্টিত টঙ্গী পূর্ব থানা কম্পাউন্ডকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো দেখা গেছে।
থানা ও সরকারি হাসপাতালের সামনে কালীগঞ্জ সড়কে হাটু পানি পর্যন্ত প্রবাহিত হচ্ছে। মহাসড়কের ওপরে পানি ভেঙ্গে যান চলাচলের সময় বিভিন্ন পয়েন্টে বেশ কয়েকটি গাড়ি গর্তে পড়ে মারাত্মক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব গাড়ি সরাতে হিমশিম খেতে দেখা গেছে জিএমপি ট্রাফিক পুলিশকে। এসব পয়েন্টে রাস্তায় হাঁটু পানি মাড়িয়ে পুলিশ সদস্যদেরকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
এই জলাবদ্ধতাকে সাময়িক ও উন্নয়ন যন্ত্রণা দাবি করে গাজীপুর নগর কর্তৃপক্ষ জানায়, নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডেই রাস্তা-ড্রেন সংস্কারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে এবার একটু বেশি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ‘দ্রুত গতির বাস চলাচল’ (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলমান। বিআরটি ড্রেনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরিণ ড্রেনগুলোর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিআরটি ড্রেনগুলো পরিপূর্ণভাবে চালু না হওয়া পর্যন্ত নগর কর্তৃপক্ষ কিছু বিকল্প পদ্ধতিতে পানি সরানোর চেষ্টা করছে।
Leave a Reply