এক-এগারোর কারণে ক্ষমতার পালাবদল না ঘটে স্থায়ী বদল হওয়ার কুফলে দেশের আমজনতাকে হতে হয়েছে ভোটাধিকার হারা আর সুফলভোগীরা স্থায়ীভাবে মসনদে আসন গেড়ে বসেছেন। লেখক গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ রচিত ‘এক-এগারো ও বাংলাদেশ ২০০৭-০৮’ নামক বইতে এক-এগারো সঙ্ঘটিত হওয়ার প্রেক্ষাপটসহ অঘটন ঘটন পটিয়সীদের সাক্ষাৎকার ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে দুই নেত্রীর কথোপকথন সম্পর্কে যা স্থান পেয়েছে এবং তার বিশ্লেষণে প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসানের ‘ক্ষমতার পালাবদল : এক-এগারোর অজানা কথা’ শিরোনামে যে লেখাটি গত বছরের ২৫ অক্টোবরের সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল তা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, দু’জনই যে বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন তা হচ্ছে- ‘দলীয় সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেননি বলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দলীয় সরকারকেও দলীয় স্বার্থে ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছিল। এ কারণেই ‘এক-এগারো পরিস্থিতি’ সৃষ্টি হয়েছিল। এটি এমন একটি ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে যার প্রভাব প্রতিক্রিয়া থাকবে আরো অনেক দিন। এক-এগারোর আগে ক্ষমতায় ছিল রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার যা কার্যত বিএনপি সরকারের বর্ধিত সংস্করণ ছিল। ফলে বিএনপি জোটের বাইরের সব দল ক্ষমতার এ পরিবর্তন স্বাগত জানিয়েছিল।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়া ছিল, ড. ফখরুদ্দীনের সরকার ছিল তাদের আন্দোলনের ফসল। আন্দোলনের ফসলের সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ের রেকর্ড আওয়ামী লীগের ঝুলিতে ছিল না। তাই ১৯৯৪-৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের আন্দোলনে যেসব বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ আওয়ামী লীগকে অকুণ্ঠ সমর্থন জুগিয়েছিলেন তারা এক-এগারোকেও স্বাগত জানিয়েছিলেন। ব্যাপার হচ্ছে, তাদের অনেকে ১৯৯৬ সালে বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০০৯ সালে পদোন্নতি পেয়ে আপিল বিভাগে নিয়োগ পান এবং তাদের একজন প্রধান বিচারপতি হয়ে গত ১১ মে ২০১১ কাস্টিং ভোটের ৪-৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতার রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন; ড. ফখরুদ্দীন-জেনারেল মঈনউদ্দিন সরকারকেও বৈধতা দিয়েছিলেন। কারণ তাদের নেত্রী ২০০৭ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে এ সরকারের সব কর্মকাণ্ডের বৈধতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির প্রস্তাবিত নবম সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের ১৬০-১৭০টি আসনে জয় নিশ্চিত থাকলেও ২০০টি আসনে জয় নিশ্চিত ছিল না, আর ২০০টি আসন না পেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতে না পারলে ২০১২ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে আবার ক্ষমতা হারাতে হবে তাই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য ছিল, নির্বাচন দুই বছর পিছিয়ে কমপক্ষে ২০০ আসনে জয় নিশ্চিত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা। বিএনপির আইনমন্ত্রীর সংশোধন অযোগ্য ভুলের খেসারত শুধু বেগম জিয়া দিচ্ছেন না, জাতিকেও দিতে হচ্ছে ভোটাধিকার হারা হয়ে। নবম সংসদ নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদে বিচারপতি কে এম হাসানকে বসানোর লক্ষ্যে শুধু বিচারপতিদের চাকরির বয়স দুই বছর বৃদ্ধি করে প্রতিপক্ষের হাতে ‘একটি মারণাস্ত্র’ তুলে দিয়েছিল। দ্বিতীয় ভুল ছিল রাষ্ট্রপতিকে উপরাষ্ট্রপতির পদমর্যাদাসম্পন্ন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণে সম্মত করা। উপরাষ্ট্রপতি সাময়িকভাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করতে পারলেও রাষ্ট্রপতি কখনো উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চারজন উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতির ওপর আস্থা হারিয়ে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে পদত্যাগ করায় আওয়ামী লীগ প্রধান কর্তৃক তখন অভিনন্দিত হলেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে তারা বিরূপ মন্তব্য করায় ‘নির্বাচন করতে ব্যর্থ উপদেষ্টা’ বলে তারা নিন্দিত হন এবং তাদের ২০০৬ সালের পদক্ষেপ যে ভুল ছিল তা সাত বছর পর তারা বুঝতে পারে। তাদের পদত্যাগের পরও নির্বাচনের কার্যক্রম এগিয়ে যেতে থাকায় ১৪ দল এই মর্মে প্রচারণা শুরু করেছিল যে, রাষ্ট্রপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান থাকলে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। তিনি প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে বিএনপিকেই পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবেন। প্রায় সব দল ও তাদের সমর্থক এলিট গোষ্ঠী তাদের সাথে একমত পোষণ করে যেকোনো মূল্যে নির্বাচন ঠেকানোর ডাক দিয়েছিল। অথচ একই গোষ্ঠীর ২০১৩ সালের স্লোগান ছিল- প্রধানমন্ত্রী তার ৫০ জন মন্ত্রী ও দলের ২৬৫ এমপি ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে; তাই যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হতে হবে। তারা ভুলে গিয়েছিলেন ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব ব্যারিস্টার সালাম তালুকদারের দু’টি আসনসহ ৩৫-৪০টি আসনে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সাবেক প্রভাবশালী এমপিরা ১০০ থেকে দুই হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির এত ক্ষমতা থাকলে রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস তা ১৯৯৬ সালেই করতে পারতেন। অরাজনীতিবিদ রাষ্ট্রপতির পক্ষে তা করা কিভাবে সম্ভব হতো? জাতিসঙ্ঘের বরাতে একটি ভুয়া ই-মেইল বার্তা জেনারেল মঈনের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার শপথ গ্রহণের সাথে সাথে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব চলে যেত রাষ্ট্রপতির হাতে। এ ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস সেনাপ্রধান বরখাস্ত করে তার অভিযান ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন। আর যে ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুরোধে ২০০১ সালের নির্বাচনের ১৫ দিন আগে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা জব্দ করে সামরিক শাসনের মতো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব জেনারেল মঈনের হেফাজতে নেয়ার জন্যই মঈন ও তার সহযোগী বর্তমানে জাপার এমপি জেনারেল মাসুদউদ্দিন চৌধুরী ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবনে অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রপতিকে নামকাওয়াস্তে মসনদে বসিয়ে রেখে সংবিধান বহির্ভূতভাবে দ্বৈত নাগরিক ড. ফখরুদ্দীনকে দুই বছরের জন্য প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ দিতে রাষ্ট্রপতিকে বাধ্য করেছিলেন।
এই অভিযানের পক্ষে জেনারেল মঈন লেখক মহিউদ্দিন আহমেদের কাছে যে যুক্তি তুলে ধরেছেন তা হচ্ছে- ‘একজন সৈনিক দুই বছর শান্তিরক্ষীবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করলে যে আর্থিক সুবিধা পান, তা তার সারা জীবনের বেতন-ভাতা ও পেনশনের চেয়েও বেশি। তাই তারা দেশে ফিরে এলে সেনাবাহিনীতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতো বলে এক-এগারো ঘটিয়েছিলাম’। তবে সৈনিকরা দেশে ফিরে এলে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতো না। কারণ তারা সবাই দেশের সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিল। তাই দেশে ফিরে এলে কেউ বেকার হয়ে পড়ত না। ওই সময় পর্যন্ত তাদের চেয়ে ১০ হাজার গুণ বেশি বঙ্গ সন্তান নিজ খরচে বিদেশে গিয়ে বছরে লাখ কোটি টাকার বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠাত। সম্প্রতি করোনার সময় আট থেকে ১০ লাখ প্রবাসী চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসে বেকার হয়ে পড়লেও তাতে তেমন প্রতিক্রিয়া দেশে হয়নি। তা ছাড়া এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জেনারেল মঈন কে? তার দায়িত্ব ছিল ওই ই-মেইল বার্তাটি প্রতিরক্ষা সচিবের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির দফতরে পাঠিয়ে দেয়া আর বেশি জরুরি হলে তিনি রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ প্রার্থনা করে পরিস্থিতির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারতেন।
‘এক-এগারো’র কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত দুই নেত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে একতরফা নির্বাচন রোধে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ ঘটতে পারে এমন সম্ভাবনার কথা বেগম জিয়াকে বললে তিনি তা বিশ্বাস করেননি। অপর দিকে এমন সম্ভাবনার কথা শেখ হাসিনাকে জানালে তিনি বলেছিলেন, ‘সামরিক বাহিনী যদি হস্তক্ষেপ করে সবকিছু ঠিকঠাক করে দিতে পারে তাহলে ভালো হবে।’ সামরিক বাহিনী যদি ক্ষমতা না ছাড়ে, এমন প্রশ্নের জবাবে সে রাষ্ট্রদূতকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার মতে সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে পারে, এমন দৃঢ়চেতা কেউ নেই।’ আসলে প্রভাবশালী প্রতিবেশী ভারতের সমর্থন ছাড়া কোনো সামরিক সরকার এ দেশে টিকতে পারবে না।
ভারতের তৎকালীন সরকার যেহেতু আওয়ামী লীগের পুরনো বন্ধু তাই জেনারেলদের কাছে ‘আওয়ামী লীগ ফ্যাক্টর’ খুবই গুরুত্ব পেয়েছিল। ‘মঈন-মাসুদ বাহিনী’ ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির ‘অক্সিজেন মাস্ক’ তুল্য ক্ষমতা খুলে নেয়ায় যে রাজনৈতিক বিপর্যয় দেশে ঘটেছিল, তার সুফল একদল আজীবন ক্ষমতায় ও অন্যদল আজীবন বিরোধী দলে বসলেও জনগণ হয়েছে ভোটাধিকার হারা। এমপি নির্বাচন দূরে থাক, বিশেষ প্রতীকের বাইরে একজন ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের ক্ষমতাও জনগণের হাতছাড়া হয়ে গেছে।
এক-এগারোর পরে কিং পার্টি গঠন করে অনেক নেতা দেশব্যাপী দাপিয়ে ঘুরে বেড়াতে থাকায় বিদেশী সুহৃদরা ঘুড়ির সুতার লাটাইতে টান দেয়া শুরু করেছিলেন পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের মতো চাল রফতানি বন্ধ না করে ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করে। ফলে বাংলাদেশে ১৫ টাকা কেজি দরের মোটা চালের দাম এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে পড়ায় সঙ্কট সৃষ্টি হওয়ায় সরকার ভারতের শরণাপন্ন হলে তারা জরুরি ভিত্তিতে পাঁচ লাখ টন চাল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও রফতানির ধীরগতি অব্যাহত থাকায় ড. ফখরুদ্দীনরূপী সরকারের লাইফ ব্লাড সেনাপ্রধান ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত সফরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। ভারত সফরকালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির সাথে তার যে কথোপকথন হয়েছিল তা প্রণব বাবুর লেখা ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ারস ১৯৯৬-২০১২’ বইতে প্রকাশ পেয়েছে। তা থেকে জানা যায়, ‘তিনি দুই নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে দ্রুত নিবার্চন দেয়ার তাগিদ দিলে জেনারেল মঈন বলেছিলেন, নির্বাচন দিলে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে তার ওপর প্রতিশোধ নিতে পারেন। প্রণব বাবুর কাছে জেনারেল তার নিরাপদ প্রস্থানের নিশ্চয়তা চাইলে তিনি সেটা দেখার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন।’ বাংলাদেশের সেনাপ্রধানকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য ভারতের অর্থমন্ত্রীর কাছে নিজের নিরাপত্তা চাওয়ার চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে? জেনারেল মঈন পরে তার ভুল বুঝতে পারলেও তার করার কিছুই ছিল না। তবুও শেষ চেষ্টা হিসেবে গোয়েন্দা বাহিনীর সহায়তায় ‘দুই নম্বর বিএনপি’ গঠন করে নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি আদায় ও তাদের সাথে বৈঠকে বসাতে সফল হলেও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মরহুম খন্দকার দেলোয়ারের দৃঢ়তায় তার সে প্রচেষ্টা ভণ্ডুল হয়ে পড়ে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনকালে যেহেতু ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো কোনো সরকারি দল ছিল না তাই বর্তমানের মতো এজেন্টদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনার সম্ভাবনা জিরো পার্সেন্ট ছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রশাসন, পুলিশ ও পোলিং অফিসাররা সবার আগেই বুঝতে পারতেন নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল ১৯৯১ সালে। তাই আওয়ামী লীগের এজেন্টদের ও পুলিশ এবং পোলিং অফিসারদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ধানের শীষের পক্ষে ভুয়া ভোটাররা ভোট দিয়ে অক্ষত শরীরে বাড়ি ফিরে যেতে পারবে এমন কোনো পরিবেশ বাংলাদেশে অতীতেও ছিল না, বর্তমানেও নেই, ভবিষ্যতেও হবে না।
যারা ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ‘এক-এগারোর জুনিয়র সদস্যদের রাস্তায় প্রহরায় বসিয়ে রেখে ১৯৯৬ সালের ‘বিদ্রোহী’দের উত্তরসুরিদের সহায়তায় মধ্যরাতে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন সফল করে একই পদ্ধতিতে সিটি করপোরেশন, পৌর নির্বাচন ও ইউপি নির্বাচন করে চলেছেন, তাদেরকে বলুন, তারা বিরোধী দলে থেকে যেভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসেছিলেন একই ব্যবস্থা বিরোধী দলের জন্য এখনই কায়েম করে তাদের ১২ বছরের উন্নয়নের মূল্যায়নের ভার জনগণের হাতে ছেড়ে দিন। আল্লাহ তায়ালা সব সরকার ও তাদের সমর্থকগোষ্ঠীকে সুমতি দিন, এটাই জনগণের কামনা।
Leave a Reply