1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন

গিঁটে-গিঁটে পিটিয়ে হত্যা গৃহকর্মীকে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০২১

রাজধানীর পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষিকার বর্বর নির্যাতনের বলি হয়েছে কিশোরী গৃহপরিচারিকা লাইলী আক্তার (১৬)। গত শনিবার বিকালে কলেজের শিক্ষক আবাসিক ভবনের চতুর্থতলা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। আর এ ঘটনায় দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শিক্ষিকা ফারজানা ইসলামকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- নিহতের চোখ, মুখ, কোমর, হাঁটুসহ পায়ের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত, পোড়া, ঝলসানো আঘাত ও নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শারীরিক নির্যাতনেই মৃত্যু হয়েছে গৃহপরিচারিকা লাইলীর। পুলিশ বলছে, গিরায় গিরায় পেটানো হয় কিশোরী ওই গৃহকর্মীকে। এতে তার সারা দেহ কালো রঙ ধারণ এবং থেঁতলে গেছে। শিক্ষিকার ব্যক্তিগত বিষয়েও তাকে শারীরিক নির্যাতনে হত্যার কারণ হতে পারে। এ ঘটনায় নিহতের মা মোছাম্মদ সামেলা বাদী হয়ে রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই থানার এসআই আতিকুল বিশ্বাস মুকুল জানান, গৃহকর্মী মৃত্যুর ঘটনায় কলেজ শিক্ষিকা গৃহকর্ত্রী ফারজানা ইসলাম কাকলীকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাইলীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ছিল। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

এদিকে গৃহকর্ত্রী ফারজানা ইসলাম কাকলীর বিরুদ্ধে পুলিশের চাওয়া রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। নিউমার্কেট থানায় করা মামলায় এ আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্তকর্তা। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়- গৃহকর্মী লাইলীর শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শারীরিক নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তাই রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার শুনানি শেষে চার দিন মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম।

নিহতের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুরে। বাবা সিরাজুল ইসলাম। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে লাইলী ছিল সবার ছোট। অন্যদিকে অভিযুক্ত বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ফারজানা ইসলাম কাকলীর বাড়িও একই গ্রামে। তবে তার স্বামী সৌদি প্রবাসী। দায়ের করা মামলায় নিহতের মা মোছাম্মদ সামেলা উল্লেখ করেন, তার সংসারে তিন মেয়ের মধ্যে দুজনের বিয়ে হয়েছে। তিন বছর আগে স্বামী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে অভাবে পড়ে গ্রামের বাড়ির সূত্র ধরে গত বছরের আগস্টে শিক্ষিকা ফারজানা ইসলাম কাকলীর ফুফু শাহীন আক্তার খুকির মাধ্যমে মাসিক এক হাজার টাকা বেতনে লাইলীকে গৃহপরিচারিকার কাজে দেন তিনি। প্রথম মাসে মেয়ের বেতন দেওয়া হলেও তাকে আর কোনো টাকা দেওয়া হয়নি।

সামেলা আরও উল্লেখ করেন, কাজে দেওয়ার পর মাঝে মধ্যে মেয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেওয়া হয়। কিন্তু বেশিক্ষণ মা-মেয়ে কথা বলার সুযোগ পেতেন না। গত কয়েকদিন আগে মেয়ের সঙ্গে সর্বশেষ একবার কথা হয়। অল্প সময় কথা বলার পর লাইলী বলছিল- মা ম্যাডাম পাশে আছে। এর পর হঠাৎ করে লাইনটি কেটে যায়। লাইলীর মায়ের বক্তব্য, নিয়োগের পর লাইলী কখনো ছুটিও পায়নি। শনিবার রাতে পুলিশের মাধ্যমে সামেলা জানতে পারেন, তার মেয়ে দুপুর আড়াইটার আগে মারা গেছে। হাসপাতালের মর্গে এসে মেয়ের ক্ষত, পোড়া, ঝলসানো আঘাত ও নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান মা। সালেমা বলেন, ‘মেয়ের লাশে যতগুলো আঘাত-নির্যাতন আর পোড়ানোর দাগ দেখেছি তাতে মনে হচ্ছে অনেকদিন ধরে ধারাবাহিক নির্যাতন করে ওকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনায় উপযুক্ত বিচার দাবি জানাচ্ছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com