চট্টগ্রাম পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের একটি নির্দিষ্ট অংশকে বেসরকারি অপারেটর কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( সিডিএ) । এই অংশে টিকিট কেটে এখন থেকে প্রবেশ করতে হবে পর্যটকদের। তবে বাকি অংশ আগের মতো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক বোর্ড সভায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতকে দুই জোনে ভাগ করে একটি অংশকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
জানা যায়, পতেঙ্গা সৈকতের সেবার মান বাড়াতে সিডিএ’র বোর্ড সদস্য স্থপতি আশিক ইমরানকে আহ্বায়ক এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামসকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি পতেঙ্গা সৈকতের উপর ইতিমধ্যে একটি রিপোর্ট উপস্থাপন করেছেন। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে সিডিএ’র বোর্ড কমিটি সৈকতকে দুটি জোনে বিভক্ত করে অপারেটর নিয়োগের বিষয়ে একমত হওয়ার পর মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। আর এখন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই অপারেটর নিয়োগের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হবে।
জানা যায়, সিডিএর ছয় কিলোমিটারের সৈকত এবং আউটার রিং রোডের গার্ডেনিং, লাইটিং, গাছ লাগানোসহ রক্ষণাবেক্ষণ কাজ পরিচালনা করবে ২টি অপারেটর কোম্পানি। এরা নিজেদের মতো করে পর্যটকদের কাছ থেকে টিকিট বিক্রি করে সুযোগ সুবিধা দেবেন। পাশাপাশি তাদের কাজ সিডিএর পক্ষ থেকে একটি টিম তদারকি করবেন। আর অপারেটরদের আয়ের একটি অংশ সিডিএকে দেবেন।
চার সদস্যের করা রিপোর্টে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে বলা হয়, একজন পর্যটক টিকিট কেটে বাড়তি সুবিধা পেলেও টিকিট কাটা ছাড়াও সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
বিষয়টি নিয়ে গঠিত কমিটির সচিব কাজী হাসান বিন শামস বলেন, পতেঙ্গা সৈকততে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র করতে সিডিএ পরিকল্পনা নিয়েছে । এর অংশ হিসেবে সৈকতের আলো ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অপারেটর নেয়া হয়েছে। তবে এই ব্যাপারে সিডিএ বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সিডিএ’র এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন,নতুন এই উদ্যোগের কারণে সাধারণ মানুষ কোনভাবেই ভোগান্তিতে পড়বেন না। বরং তারা আগের চেয়ে ভালোভাবে সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করবেন। মূলত তাদের জন্য সেবা বাড়াতেই এই অপারেটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেই এমন সিস্টেম চালু আছে। যেখানে অপারেটররা সুযোগ সুবিধা দিয়ে নিজেদের মতো করে সৈকত পরিচালনা করেন।
উল্লেখ্য, , নগরীর পতেঙ্গা সাগরপাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বিশ্বমানের একটি সৈকত গড়ে তোলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তবে বিপুল অর্থ ব্যয়ে গড়ে তোলা সৈকত প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। বিদ্যুৎ বিলের যোগান না থাকায় এই পর্যটন কেন্দ্রের বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বাজেট না থাকায় ময়লা আবর্জনার ছড়াছড়িতে ক্রমশ নান্দনিকতা হারিয়ে ফেলছে বন্দরনগরীর এই অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
Leave a Reply