সোমবার গভীর রাতে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় অবৈধ মদের কারখানায় অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬ ব্যক্তিকে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় বিষাক্ত মদ তৈরি হচ্ছে। এসব মদ পান করে মানুষের প্রাণহানিও ঘটছে। সুদীপ কুমার জানান, এসব মদ কারখানা ধ্বংস করতেই সোমবার গভীর রাতে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। ভাটারার খিলবাড়িরটেক মুক্তি পল্লীর ইউনিয়ন পরিষদ রোডে অভিযান চালিয়ে এ সময় ৬ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ক্রাইম বিভাগের পুলিশ সদস্যরা সহযোগিতা করেছে বলেও জানান পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার।
গত কয়েকদিনে রাজধানীতে বিষাক্ত মদ পান করে বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, করোনার কারণে বিদেশি মদের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিদেশি মদ বলে হাতে তৈরি মদ বিক্রি করছে। এ ধরনের মদই মৃত্যুর প্রধান কারণ হতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ‘ব্যাম্বু স্যুট’ রেস্টুরেন্টে মদপান করেন পাঁচ বন্ধু। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাহ চৌধুরী ও তার বন্ধু আরাফাত। তাদের মধ্যে শুক্রবার হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরাফাতের। তাদের আরেক বন্ধু অসিম খান ঘটনার পরদিন ফারাহকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর গত রবিবার মারা যান ওই শিক্ষার্থী।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ক্যান্টনম্যান্ট থানাধীন ডিইউএইচএস-এ আবদুল আল মামুন নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত মদপানে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক। এর আগে গত রবিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার দুই কর্মী শিহাব জহির ও মীর কায়সার। তাদের মৃত্যুর পেছনেও দায়ী অতিরিক্ত মদপান। এ ছাড়া ওই ঘটনায় অসুস্থ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সংস্থাটির একাধিক কর্মী।
থার্টিফার্স্ট নাইট উৎযাপন উপলক্ষে ১ জানুয়ারি রাতে রাজশাহীর হোসনীগঞ্জ এলাকায় মদ পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েকজন। এদের মধ্যে ৫ জন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান ২ জানুয়ারি। মৃতরা হলেন- ফয়সাল, সজল, সাগর, তুহিন ও মুন আহম্মেদ। একই কারণে বগুড়ায় ৬ জনের মৃত্যু হয়।
গত ৯ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মদপানে অসুস্থ হয়ে ঢাকার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান বাবু, বাবুর বন্ধু তোফাজ্জল হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী মহসিন মিয়া ও নাহিদ হাসান জিসান। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন আরও ৬ জন।
Leave a Reply