করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ রোধে আবারও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ডাউনিং স্ট্রিট থেকে সম্প্রচারিত এক টিভি ভাষণে লকডাউনের এই ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে নতুন জারি হওয়া লকডাউনের নিয়মগুলো আইনে পরিণত হবে। আর নতুন জারি করা নির্দেশনাগুলো অন্তত মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বিবিসি, সিএনএনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার থেকে দেশের সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীরা আবারও অনলাইন ক্লাসে ফিরে যাবে।
সিএনএন জানিয়েছে, এবারের লকডাউনেও প্রথমবারের মতো কড়াকড়ি নিয়মের মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে করোনার নতুন ধরন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। তার মানে হলো সরকার আবারও আপনাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এবার আমাদের হাসপাতালগুলোর ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ছে। বিশ্বের অনেক দেশই সংক্রমণ রুখতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পরিস্থিতির দাবি মেনে এই মিউট্যান্ট ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদেরও একসঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাই এবার কড়া লকডাউন দেওয়া হচ্ছে। যাতে এই নতুন ভাইরাস স্ট্রেইনটি নিয়ন্ত্রণে আসে।’
লকডাউন অবস্থায় মানুষজনকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, ‘জরুরি কেনাকাটা, শরীরচর্চা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে বাইরে বের হওয়া যাবে। এ ছাড়া ঘরে কেউ নির্যাতনে শিকার হলে সে ক্ষেত্রে বাইরে বের হওয়া যাবে।’
এ সময় নতুন ধরনের করোনায় মানুষের শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা প্রকাশ করেন তিনি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে হারে শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে এতে সামনের দিনগুলো আরও কঠিন হবে।’ তার ধারণা, মহামারির বিরুদ্ধে ‘শেষ পর্যায়ের লড়াইয়ে’ প্রবেশ করতে যাচ্ছে তার দেশ।
ভাষণে ভাইরাসটি প্রতিরোধে করোনার টিকা পেতে চার ধরনের নাগরিক গোষ্ঠী অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছেন বরিস জনসন।
তিনি বলেন, ‘কেয়ার হোমের সকল বাসিন্দা এবং তাদের সেবায় নিয়োজিতরা, ৭০ বছর থেকে তার ওপরে বয়সীরা, চিকিৎসা ও সামাজিক সেবায় যুক্ত সব ধরনের ফ্রন্টলাইন কর্মীরা এবং স্বাস্থ্যগত অধিক ঝুঁকিতে থাকা মানুষেরা মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা পেয়ে যাবে।’
এদিকে, স্কটল্যান্ড বাড়িতে থাকার নির্দেশনা জারি করে এবং ওয়েলস আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে। নর্দান আয়ারল্যান্ডেও স্কুলগুলোতে দূরশীক্ষণের সময় বাড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার যুক্তরাজ্যে টানা সাত দিনের মতো নতুন করে ৫০ হাজার মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ ছাড়া ২৮ দিনে আরও ৫৮ হাজার ৭৮৪ জন নতুন করে শনাক্ত হওয়ার এবং ৪০৭ জন মৃত ব্যক্তির করোনা টেস্ট পজিটিভ এসেছে বলেও জানানো হয়েছে। যদিও স্কটল্যান্ডের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
Leave a Reply