রাজধানীর মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের বাসা থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরত্বে শ্যামলীর অফিসে যেতে অভ্যস্ত ছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থার নেতৃত্বদানকারী এএইচএম বজলুর রহমান। গ্রামীণ কণ্ঠহীন জনগোষ্ঠীকে কাজ করা সংস্থায় প্রতিনিয়ত আসতেন দূর-দূরান্তের মানুষ। প্রাণভরে কথা বলতেন, হাসতেন। কিন্তু ২০১৯ সালের বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে বদলে গেছে তার জীবনধারা।
একজন এএইচএম বজলুর রহমানের মতোই করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে সব মানুষের জীবনধারা বদলে গেছে। চীনের উহানে ২০১৯ সালের প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের উদ্ভব হলেও এদেশে প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চে। ২৬ মার্চে লকডাউন, ৩০ মে পর্যন্ত অবরুদ্ধ ছিল বাংলাদেশ।
এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরিধান, হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার-গরম পানির ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, হ্যান্ডশেক বন্ধসহ মানুষের খাদ্যাভ্যাসে অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসে। সরকারি বিধিনিষেধ বা আত্মসচেতনতার কারণে আড্ডাবাজিতে মত্ত থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে ঘরে থাকার প্রবণতা এই প্রথম।
জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বেরোলেও বিশেষ পোশাক ‘পিপিই’ পরিধান, গণপরিবহনে দূরত্ব বজায়, বাইরের খাবার পরিহার, তিন ফুট দূরে থাকার বিষয়ে নতুন এক ধারণা আসে। সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে সশরীরে সাক্ষাতের বদলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জার, ইন্টারনেট অ্যাপভিত্তিক কল ও মেসেজিং সেবা ‘হোয়াটসঅ্যাপস, ইমু, ভাইভার’ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। দেশি-বিদেশি, সরকারি-বেসরকারি সভা-সেমিনার বা রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় দিবসসমূহ জুম বা ভার্চুয়ালি হয়েছে।
পহেলা জুন থেকে করোনার এডাপ্টেশন পর্ব শুরু হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস-আদালত, বিপণিবিতান চালু হলেও মানুষের মধ্যে নিজেকে গুটিয়ে রাখার প্রবণতা তৈরি হয়। করোনা থেকে রক্ষায় মানুষ গরম পানি, ভিটামিন-সিসমৃদ্ধ ফলমূল এবং বেশি মাত্রায় সবজি খাওয়াতে ঝুঁকে পড়ে। হ্যান্ডশেকের বদলে মুষ্টিশেকে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে মানুষ। ফুসফুস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে সিগারেট ছেড়েছে। বদলে গেছে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে মানুষের চিন্তাধারাও।
এদিকে জীবন ও জীবিকার তাগিদে বিদায়ী বছরে পেশা পরিবর্তনের ঘটনাও সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। অনেক চাকরিজীবী ও পেশাজীবী কর্মহীন হয়ে পড়ায় বেছে নেন ভিন্ন পেশা। করোনাকালে অনেকেই জীবন বাঁচাতে অনলাইনে নানা পণ্য কেনাবেচা শুরু করেন। আবার আয়-রোজকার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে রাজধানী ছাড়তে হয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। শহর ছেড়ে নিজ এলাকায় চলে যান তারা। শুধু ঢাকা নয়, বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও ছিল একই চিত্র। করোনাকালে সবচেয়ে বেশি কাজ হারিয়েছেন গৃহকর্মীরা। এরপরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তৃতীয় অবস্থানে অদক্ষ শ্রমিক।
অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিতে অসংখ্য মানুষ রাজধানী ছেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বাড়ি মালিকরা। অধিকাংশ এলাকায় বাসাবাড়িতে দেখা গেছে ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি। বিশেষ করে ঋণ নিয়ে যারা বাড়ি করেছেন তারা বেশি বিপাকে পড়েছেন। ভাড়া কমিয়ে দিয়েও ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছিল না। ভাড়াটিয়া ধরে রাখতে
Leave a Reply