1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ অপরাহ্ন

দেশে ফিরতে মরিয়া লেবাননের শ্রমিকরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০

লেবাননে অবস্থানরত হাজার হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরে আসার জন্য বৈরুতের দূতাবাসে আবেদন করলেও তাদের ফেরানোর ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারছে না সরকার। প্রবাসী এ শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পাশাপাশি আলোচনা চলছে বলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে লেবাননে রাজনৈতিক সংকট ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবং সর্বশেষ বৈরুত বিস্ফোরণের পর এক প্রকার কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। এমন পরিস্থিতিতে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকার কথা জানিয়ে প্রবাসী শ্রমিকরা বাংলাদেশে ফেরত আসতে চাইছেন। বৈরুতে তিন বছর ধরে একটি হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন চট্টগ্রাম ফটিকছড়ির বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী হোসেন। প্রথম বছর বেশ ভালো উপার্জন করলেও চলতি বছরের করোনা ভাইরাস মহামারী, তার ওপর গত আগস্টে বৈরুতের ভয়াবহ বিস্ফোরণে তার মতো বহু প্রবাসী বিপর্যয়ের মুখে পড়েন। ওই বিস্ফোরণে দেশটির খাদ্য গুদাম ছাই হয়ে যাওয়ায় খাদ্যে আমদানিনির্ভর এ দেশটিতে চরম খাদ্য সংকট দেখা দেয়।

এ ছাড়া আর্থিক মন্দার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশিরা চাকরি হারাতে থাকেন। আবার যাদের চাকরি আছে লেবানিজ মুদ্রার মান হু হু করে পড়ে যাওয়ায় তারাও চলতে পারছেন না। আলী হোসেন জানান, আগে যে বেতন পেতেন সেটা লেবানিজ মুদ্রা থেকে ডলারে- এরপর টাকায় ভাঙানোর আগে যে পরিমাণ অর্থ পেতেন, এখন পান তার আট থেকে নয় দশগুণ কম। উল্টো অনেকে টিকে থাকতে বাধ্য হয়ে দেশ থেকে টাকা আনছেন। তিনি বলেন, আগে বেতন ভাঙ্গিয়ে ৩২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা পাইতাম। এখন পাই ৪ হাজার টাকা। এ টাকায় বাড়ি ভাড়া দেব কি, খাব কি আর দেশে পাঠাব কি। দেশ ওেথকে টাকা আনতে আনতে বাড়ি বিক্রি করতে হয়েছে। এইভাবে তো চলে না।

এমন অবস্থায় লেবাননে অবস্থানরত সীমাহীন কষ্টে থাকা বাংলাদেশিরা জরিমানা গুনে হলেও দেশে ফিরতে মরিয়া। আলী হোসেন বলেন, যাদের চাকরি নেই তারা রাস্তাঘাটে বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করে চলে, অনেকে ভিক্ষা করে। এর চাইতে দেশে থাকলে কিছু কর্ম করে খেতে পারব। আমরা দেশে ফিরতে চাই। কিন্তু দূতাবাসে গেলে আমাদের কথা ওরা শুনতেই চায় না, দুর্ব্যবহার করে।

সরকারি সূত্র অনুযায়ী, প্রায় ৪০ লাখ জনসংখ্যার লেবাননে বৈধ অবৈধ মিলে অন্তত দেড় লাখ বাংলাদেশি কাজ করেন। বিভিন্ন বাসবাড়িতে নারী শ্রমিক, গৃহকর্মী হিসেবে আর বেশিরভাগ পুরুষ কাজ করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে। তবে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে লেবাননে রাজনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রার মান পড়ে যাওয়াসহ এক কথায় অর্থনৈতিক মন্দার কবলে রয়েছে। তার মধ্যে করোনা ভাইরাস মহামারী এবং সবশেষে বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক রূপ নেয়। এ কারণে দেশটিতে থাকা হাজার হাজার বাংলাদেশি দেশে ফিরতে আবেদন করেছে বলে জানান দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ উইংয়ের প্রথম সচিব আবদুল্লাহ আল মামুন। তবে এসব আবেদন কবে গ্রহণ করে শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো হবে, সেটা আলোচনার ভিত্তিতে শিগগিরই জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মামুন বলেন, এ বছর আমরা সাড়ে ছয় হাজার কর্মীকে ফেরত পাঠিয়েছি। আগে যারা আবেদন করেছিল তাদের সবাইকে পাঠানোই শেষ হয়নি। তার ওপর হাজার হাজার মানুষকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হুট করে নেওয়া যায় না। এ জন্য পরিকল্পনা লাগে। এর সঙ্গে দুই দেশের সরকার, দূতাবাস, এয়ারলাইন্স সবকিছু জড়িত। আমরা আবেদন পাচ্ছি। এটা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এদিকে যেসব শ্রমিকের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই দূতাবাস তাদের ফিরিয়ে নিতে কোনো দায়িত্ব নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশ দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করে আসছে ভুক্তভোগীরা। এমন পরিস্থিতিতে লেবাননে আটকাপড়া শ্রমিকদের বিশেষ ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com