নৌবাহিনীর এক লেফটেন্যান্টকে মারধরের ঘটনায় ছেলে ইরফান সেলিম গ্রেপ্তার হওয়ার পর এক সপ্তাহের বেশি সময় অন্তরালে ছিলেন। অবশেষে জেলহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে দেখা মিলল ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের। আজ মঙ্গলবার সকালে নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান তিনি। এ সময় বড় ছেলে সোলায়মান সেলিম তার সঙ্গে ছিলেন।
জানা গেছে, সকাল সোয়া ৯টার দিকে একটি সাদা এসইউভিতে চড়ে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে জেলহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন হাজী সেলিম। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান পৌনে ১০টার দিকে। গাড়ি থেকে নেমে তিনি দাঁড়ান কারাগারের পুরোনো মালখানার কাছে।
মন্ত্রীর ইশারা পেয়ে এগিয়ে যান ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনও। এ সময় হাজী সেলিমও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সালাম দিয়ে তার পাশে দাঁড়ান। পরে সবাই মিলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও হাজী সেলিমের মধ্যে সেই সময় বাক্যালাপ হতে দেখা যায়নি। সকাল সোয়া ১০টার দিকে মন্ত্রী কারাগার থেকে চলে গেলে হাজী সেলিমও সাড়ে ১০টার দিকে বেরিয়ে যান। ছেলে গ্রেপ্তার হাওয়ার পর হাজী সেলিমকে বাইরে খুব একটা দেখা না গেলেও গত শুক্রবার চকবাজার শাহী জামে মসজিদে তিনি নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বলে স্থানীয়রা জানান।
প্রসঙ্গত, ২৫ অক্টোবর রাতে এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাজধানীর কলাবাগান সিগন্যালের পাশে এ ঘটনা ঘটে। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও পরদিন ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
মামলার পর দুপুরে র্যাব পুরান ঢাকায় চকবাজারের ২৬ দেবীদাস লেনে হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালায়। পরে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে হেফাজতে নেয়। বাসায় অবৈধভাবে মদ ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দুজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন।
২৭ অক্টোবর ডিএসসিসির কাউন্সিলর পদ থেকে ইরফানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বর্তমানে ইরফান কারাগারে আছেন। এ ছাড়া সংসদ সদস্যের পরিবারের ‘অবৈধ সম্পদের’ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে দুদক। ছেলের ওই ঘটনার পর থেকে আড়ালে ছিলেন হাজী সেলিম।
Leave a Reply