শুভ বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে আজ সোমবার এ বছরের মতো শেষ হচ্ছে দুর্গাপুজো। চার দিনের আনন্দের শেষে তাই বিষাদের সুর বাঙালির মনে। দেবী দুর্গা মর্ত্যলোক ছেড়ে ফিরে যাবেন হিমালয়ের কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। তাই অশ্রু ঝরিয়ে মাকে বিদায় জানানোর পালা। এদিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বৃহস্পতিবার সকালে ষষ্ঠীর দিনে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে এবারের উৎসব শুরু হয়েছিল। মর্ত্যে পাঁচ দিন মৃন্ময়ীরূপে মণ্ডপে মণ্ডপে অবস্থান করেছেন দেবী। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এবার দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা মর্ত্যে এসেছিলেন দোলায় বা পালকিতে চড়ে। দোলায় আসার অর্থ মড়ক বা মহামারী। ফিরে যাবেন গজের পিঠে বা হাতিতে চড়ে। গজে চড়ে গমনের ফল অবশ্য শুভ হয়।
প্রতিমা বিসর্জনের জন্য এবার অবশ্য রাজধানীতে হচ্ছে না কোনো বিজয় শোভাযাত্রা। করোনা মহামারীর কারণে আগে থেকেই এ সিদ্ধান্ত। সে কারণে প্রতিটি ম-প থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হবে। ম-পগুলো থেকে প্রতিমা নিয়ে সরাসরি চলে যাওয়া হবে বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটে। সেখানেই বিসর্জন দেওয়া হবে প্রতিমাগুলো। জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি আমাদের সময়কে বলেন, ‘এবার বিজয় শোভাযাত্রা হচ্ছে না। প্রতিমা নিয়ে ঘাটে এলে তাদের প্রতিমা বিসর্জনে সহযোগিতা করা হবে। তা ছাড়া যারা প্রতিমা বহন করতে পারবেন, শুধু তাদেরই এবার ঘাটে যাওয়ার অনুরোধ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে করোনার মহামারীর কারণে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুরের মধ্যে দুর্গাপূজার মূল আচার-অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা আরতির পর পূজাম-প বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ছিল। জনসমাগম এড়াতে অষ্টমী তিথিতে এ বছর ঢাকায় কোথাও কুমারী পূজাও হয়নি। মূলত উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে নির্দেশনা ছিল পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে। তাই এবারের দুর্গোৎসবকে দুর্গাপূজা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। হয়নি কোনো আরতি প্রতিযোগিতা। দোকানপাট ছিল না, ছিল না কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। পূজাম-পের সংখ্যাও কম ছিল গতবারের তুলনায়। গত বছর সারাদেশে ম-প সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৩৯৮টি। এবার ১ হাজার ১৮৫টি কমে হয়েছে ৩০ হাজার ২১৩টি।
Leave a Reply