1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ অপরাহ্ন

কুকিয়ারের গ্রহটা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২০

রাতের আকাশে টেলিস্কোপে চোখ রেখে যদি আবিষ্কার করা যায় নতুন কিছু! তোমাদেরই বয়সী আমেরিকান কিশোর ওলফ কুকিয়ার সেটাই করে ফেলল। নাসায় শিক্ষানবিশ হিসেবে টেলিস্কোপের সামনে তিন দিন কাটতে না কাটতেই খপ করে ধরে ফেলল একটা নতুন গ্রহ। জানাচ্ছেন ফয়সল আবদুল্লাহ
গ্রহ আবিষ্কার

পড়াশোনায় হাই স্কুল সিনিয়র ওলফ কুকিয়ার। বয়স ১৭। আমাদের হিসাবে ধরা যেতে পারে, কলেজের গণ্ডি পেরিয়েছে। তাতেই সুযোগ পেল নাসায় শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার। শুরুর দিকে টুকটাক এটা-সেটা করার কথা থাকলেও সুযোগ পেয়ে গেল নাসার ট্রানজিটিং এক্সোপ্লানেট সার্ভে স্যাটেলাইট নামের একখানা বড়সড় টেলিস্কোপে ধরা পড়া তথ্য যাচাইয়ের কাজ। আর সেই টেলিস্কোপ নিয়ে তিন দিন না কাটতেই কুকিয়ারের চোখে ধরা পড়ে একটা বিন্যাস।

‘আমার কাজ ছিল এমন একটা গ্রহ খুঁজে বের করা, যেটা কিনা একসঙ্গে দুটো নক্ষত্রকে ঘিরে ঘুরছে।’ বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলল কুকিয়ার।

কাজটা কিভাবে করতে হয়? গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং বলে একটা মজার বিষয় আছে। কোনো নক্ষত্রের সামনে দিয়ে যখন কোনো গ্রহ হেঁটে যায়, তখন ওই গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে নক্ষত্রের বিচ্ছুরিত আলোটা খানিকটা ফুলেফেঁপে ওঠে। আলোর এই ‘ফুলে ওঠা’র দৃশ্য যখন একটা নিয়মিত বিরতিতে ধরা পড়ে টেলিস্কোপে, তখন গ্রহের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ থাকে না। কুকিয়ার দ্বিতীয় দিনেই আলোর ওঠানামার বিষয়টি তার সিনিয়রদের জানায়। শুধু জানায় বললে ভুল হবে, কত সময় বিরতিতে আলোর ওঠানামা কতটা তীব্র হচ্ছে না হচ্ছে তা নিয়ে একটা ছোটখাটো রিপোর্ট জমা দেয়। আর বড় বড় বিজ্ঞানীদের আগ্রহ জাগাতে ওটাই ছিল যথেষ্ট। এরপর সবাই মিলে ঘোষণা দেয়, পাওয়া গেছে নতুন এক ‘সারকামবাইনারি প্লানেট’। দুটো নক্ষত্রকে ঘিরে ঘুরতে থাকে বলেই এমন নাম।

গ্রহের নাম

নতুন গ্রহের আবিষ্কর্তা হিসেবে নাম রাখার কাজটা কুকিয়ারের ওপর ছেড়ে দিলেই হতো। কিন্তু নাসার বিজ্ঞানীরা বড় বেরসিক। তাঁরা গ্রহটার নাম রাখলেন টিওআই ১৩৩৮বি। এর সামনে-পেছনে কুকিয়ারের কোনো চিহ্ন নেই। এ নিয়ে ওলফ কুকিয়ার প্রথম দিকে খানিকটা মন খারাপই করেছিল। কিন্তু মন ভালো করে দেয় বন্ধু ও পরিবার। নাসা যেটাই বলুক, তারা নতুন গ্রহের নাম দিয়েছে ওলফটোপিয়া।

গ্রহ আবিষ্কারের পরই বড় বড় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলতে গেলে ছেঁকে ধরে কুকিয়ারকে। চলতে থাকে একের পর এক সাক্ষাৎকার। তাতেই বেরিয়ে আসে ১৩৩৮বি ওরফে ওলফটোপিয়ার অনেক তথ্য।

টিওআই ১৩৩৮বি গ্রহটি আমাদের পৃথিবী থেকে প্রায় এক হাজার ৩০০ আলোকবর্ষ দূরে। মানে সেকেন্ডে তিন লাখ কিলোমিটার গতিতে ছুটে গেলেও (যা বর্তমানে আদৌ সম্ভব নয়) ওই গ্রহে যেতে লাগবে এক হাজার ৩০০ বছর। নতুন এ গ্রহে প্রাণের বিকাশ বলতে গেলে অসম্ভব। কুকিয়ার জানাল, যে দুটো তারা ঘিরে গ্রহটা ঘুরছে, সেগুলো সূর্যের চেয়ে অনেক বড়। তাই গ্রহের তাপমাত্রাও হবে বেশি। তাপমাত্রা এতই বেশি হতে পারে যে পুরো গ্রহটা হয়তো একটা উত্তপ্ত গ্যাসের বল। পৃথিবী থেকে প্রায় সাত গুণ বড় হলেও এতে কঠিন কোনো বস্তুর অস্তিত্ব থাকা প্রায় অসম্ভব। তবে কোনোভাবে গ্রহটাতে যেতে পারলে একই দিনে দুটো সূর্যাস্ত দেখা যাবে।

কুকিয়ারের প্ল্যান

‘চার দিন ধরে অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছি। সবাই খুব উচ্ছ্বসিত। এ যেন এক পরাবাস্তব অভিজ্ঞতা।’ বলল কুকিয়ার। নাসাও যে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সেটাও জানাল। অবশ্য গ্রহ আবিষ্কার করে হৈচৈ ফেলে দিলেও কুকিয়ার যে এখন থেকে নাসাতেই চাকরি করবে তা কিন্তু নয়। পড়াশোনা আরো ঢের বাকি। কুকিয়ারের ইচ্ছা হলো প্রিন্সটন, স্ট্যানফোর্ড কিংবা এমআইটিতে পড়া। তবে যেখানেই পড়ুক, বড় হয়ে মহাকাশ নিয়েই পড়ে থাকতে চায়। কারণ মহাকাশে যে এখনো অপেক্ষা করছে অনেক চমক!

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com