জামিনে মুক্ত হয়েছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাত। তারা দুজনই অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে যা জানেন তা বিস্তারিত তুলে ধরবেন। তবে এর আগে তাদের কিছুটা সময় প্রয়োজন।
গতকাল সোমবার রাতে নিজেইরাই এ কথা জানিয়েছেন। কক্সবাজারে শিপ্রা-সিফাত সাংবাদিকদের বলেন, কিছুদিন সময় দেন। হত্যাকাণ্ডটি সম্পর্কে বিস্তারিত জাতিকে জানাব। জাতিকে সত্যের সামনে আমরাই নিয়ে যাবো।
পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার সঙ্গে তথ্যচিত্র নির্মাণে যুক্ত থাকা স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত গতকাল সোমবার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন জানান, দুই মামলায় আদালতের জামিন আদেশের কপি হাতে পাওয়ার পর সোমবার বেলা ২টা ৫ মিনিটে সিফাতকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির পর পরই জেল গেট থেকে সাদা পোশাকধারী লোকজন তাকে দ্রুত নম্বরবিহীন একটি মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যান। সে কারণে কারা ফটকে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি সিফাত।
তবে রাতে কক্সবাজারে সাংবাদিকদের সিফাত বলেন, ‘মানসিকভাবে শারীরিকভাবে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। আমার পায়ে গুলি লাগেনি। আশা করি সুষ্ঠু তদন্ত হবে। আমাদের একটু সময় দেন।’
এর আগে গত রোববার জামিনে মুক্তি পান শিপ্রা। রোববার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে তিনি কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসেন। রামু থানায় করা মামলায় রোববার শিপ্রার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১-এর বিচারক দেলোয়ার হোসেন।
শিপ্রা বলেন, ‘প্লিজ, প্রে ফর আস। সিফাত এবং আমি আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, পাশে থাকবেন। আপাতত এতটুকুই বলার আছে। আমরা প্রত্যেকটা কথা বলব। প্রত্যেকটা সত্যি বলব। একটু সময় দেন। প্রচুর গুজব শোনা যাচ্ছে। আমরা বিভ্রান্তিমূলক নিউজ চাই না।’
দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া রাশেদ ‘জাস্ট গো’ নামে একটি ভ্রমণবিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য প্রায় এক মাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন। ওই কাজেই তার সঙ্গে ছিলেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত ও শিপ্রা।
সিনহা নিহতের ঘটনায় এবং গাড়ি থেকে মাদক উদ্ধারের অভিযোগে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ, যাতে সিনহা এবং তার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আসামি করা হয়। আর নিলীমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে গ্রেপ্তার করার সময় মাদক পাওয়া যায় অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা করা হয়।
গত ৩১ জুলাই টেকনাফে মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা রাশেদ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাহেদুল ইসলাম সিফাত। ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য মেজর (অব.) সিনহা, শিপ্রা, সিফাত ও তাসকিন ৩ জুলাই থেকে কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন।
Leave a Reply