ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী সীমিত পরিমাণে ও সচেতনভাবে আম খেতে পারেন। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়।
আম একটি প্রাকৃতিক ফল, যাতে আছে-
► প্রাকৃতিক চিনি (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ)।
► ফাইবার (আঁশ)।
► ভিটামিন সি, এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
► কিছু পরিমাণে ভিটামিন বি এবং খনিজ।
এগুলো শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু যেহেতু আমে চিনি থাকে, তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য তা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রেখে খাওয়াটাই মূল বিষয়।
* কীভাবে আম খেলে উপকার পাওয়া যাবে
► মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন : দিনে ১টি ছোট পিস বা ১/৩ কাপ (প্রায় ৫০ গ্রাম) খাওয়া অনেকের জন্য নিরাপদ।
► খালি পেটে খাবেন না : আম খেলে তার সঙ্গে প্রোটিন বা আঁশযুক্ত খাবার (যেমন বাদাম বা দই) খান, এতে রক্তে শর্করার বৃদ্ধি ধীরে হয়।
► একইদিনে অন্য ফল খাওয়া পরিহার করুন, যেন চিনি মাত্রা না বাড়ে।
► রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে তবেই খান। অনিয়ন্ত্রিত সুগার থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
► শরীরচর্চা করুন : ফল খাওয়ার পর হালকা হাঁটা বা ব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
* যেসব অবস্থায় সাবধানতা জরুরি
► যদি রক্তে শর্করার মাত্রা >250 mg/dL থাকে।
► যদি ইনসুলিন বা স্যুলফোনাইল ইউরিয়াজাতীয় ওষুধ কেউ খায়, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
► যদি ওবেসিটি বা ওজনাধিক্যে কেউ ভুগে থাকেন, কারণ আমে ক্যালরি বেশি থাকে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, আমে থাকা ম্যাঙ্গিফেরিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। কম পরিমাণে আম রক্তে চিনি বাড়ায় না, যদি সেটা ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্য পরিকল্পনার অংশ হয়।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ও চিকিৎসকের পরামর্শে আম খেতে পারেন। একে একেবারে নিষিদ্ধ না করে বিজ্ঞানসম্মতভাবে খাদ্য পরিকল্পনার অংশ করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেহ হাসপাতাল
Leave a Reply