গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা চলছেই। গতকাল রবিবারও এ অঞ্চলে দিনভর অভিযান চালিয়েছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। এতে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, গত কয়েক ঘণ্টায় উপত্যকাটিতে ১৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭০ জন উপত্যকাটির উত্তরাঞ্চলের এবং গাজা সিটির।
গাজায় ব্যাপক স্থল হামলা শুরুর কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে , ‘গতকাল, অপারেশন গিডিয়ন চ্যারটের অংশ হিসেবে আমাদের দক্ষিণ কমান্ডের স্যান্ডিং এবং রিজার্ভ সেনারা উত্তর ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় ব্যাপক স্থল হামলা শুরু করেছে।’
প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, স্থল হামলায় সহযোগিতা ও হামাসের পাল্টা হামলা প্রতিহতে গত এক সপ্তাহে তাদের বিমানবাহিনী হামাসের ৬৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। যার মধ্যে ছিল হামাসের বিভিন্ন সেল, সুড়ঙ্গ এবং ট্যাংক বিধ্বংসী সাইট।
এখন পর্যন্ত হামাসের কয়েক ডজন সদস্য এবং বেশ কিছু অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। এছাড়া গাজার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো দখল করে রাখার তথ্য জানিয়েছে দখলদারদের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
এদিকে তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে ফিলিস্তিনিরা। একবেলার খাবারও জোটে না বহু পরিবারের। কেউ কেউ তিন দিনেও খায়নি কিছু। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি, ওষুধ সবকিছুরই চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে উপত্যকাজুড়ে।
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি অবরোধ ও টানা হামলার কারণে গাজার অধিকাংশ হাসপাতালই কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে অনেক আগে। সবশেষ হামলায় ভূখণ্ডটির অন্যতম বৃহত্তম ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালও সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ২০ হাজার।
এছাড়া গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৩২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজায় স্থল ও আকাশ হামলা আরও বেড়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
Leave a Reply