1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

সীমান্তে পাঁচ বছরে বিএসএফের গুলিতে নিহত ১৫১ বাংলাদেশি

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে গত পাঁচ বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫১ জন বাংলাদেশি। বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর তথ্য বলছে, এই হতাহতের ঘটনায় রংপুর বিভাগের ৬টি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, যেখানে প্রাণহানির ঘটনা ৪০ শতাংশ।

দুই দেশের দীর্ঘ ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্তের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে রংপুর বিভাগ। কৃষিকাজসহ নানা প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষদের চলাচল থাকে সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলে। এই সুযোগকে কেন্দ্র করে চোরাচালান চক্রও সক্রিয় রয়েছে। তবে, দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, সীমান্তে কোনোভাবেই সরাসরি হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। তা সত্ত্বেও নিয়মিতভাবেই বিএসএফের গুলিতে নিহত হচ্ছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা।

আসকের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে বিএসএফের গুলিতে নিহত ১৫১ জন বাংলাদেশির মধ্যে রংপুর বিভাগেই মারা গেছেন ৬১ জন। সীমান্তে বসবাসকারী মানুষদের অভিযোগ, বিএসএফের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং আগ্রাসী মনোভাবের কারণে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হয় তাদের।

গ্রামবাসীরা জানায়, ‘রাতে ঘুমাতে পারি না, কখন যে গুলি করে বসে বলা যায় না। কৃষিকাজ করতে গেলেও সন্দেহ করে ফায়ার করে। মনে করে চোরাচালান করছে।’

রংপুর বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে লালমনিরহাট জেলায়। গত পাঁচ বছরে জেলাটিতে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন ১৯ জন। সবশেষ গত ১৭ এপ্রিল সিংগীমারী সীমান্তে ঘাস কাটতে গেলে বাংলাদেশ অংশে ঢুকে হাসিবুল নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। পরে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার। হাসিবুলের মা জানান, ‘ওদের রাইফেলের মাথা দিয়ে বুক খুঁচিয়ে ছেলেকে ক্ষতবিক্ষত করেছে। তারপর আটা বস্তার মতো ছুঁড়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে গেছে।’

২০১১ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যাকাণ্ডের পর সীমান্ত হত্যা নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ হলেও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। ১৩ বছর পার হলেও তার পরিবার আজও পায়নি ন্যায়বিচার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃত্যুরোধে দুই দেশের উচিত সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ত্বহা হুসাইন বলেন, ‘সীমান্ত সংক্রান্ত যেসব চুক্তি আছে, সেখানে স্পষ্টভাবে বলা রয়েছে—কেউ যদি অনুপ্রবেশ করে তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে, কিন্তু প্রাণনাশ নয়।’

এদিকে সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাস, অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) পক্ষ থেকে টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ১৫ বিজিবির লে. কর্নেল মেহেদী ইমাম জানান, ‘সীমান্তের জিরো লাইনের ১৫০ গজের মধ্যে কেউ যাতে ঢুকতে না পারে এবং আমাদের নাগরিকরাও যেন তা অতিক্রম না করেন, তা নিশ্চিত করতে টহল অব্যাহত রয়েছে।’

দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের স্বার্থে এবং সীমান্তে নিরীহ মানুষের প্রাণরক্ষা নিশ্চিত করতে মানবাধিকার কর্মীরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com