1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৫ অপরাহ্ন

সংকট নিরসনে নেতৃত্ব বাছাই হবে ভোটে

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল শক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি। প্রকাশ্যে নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এবং হাইকমান্ডের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় প্ল্যাটফর্মটির থাকা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। তবে সেসব সংকট কাটিয়ে নির্বাচনের প্রশ্নে একমত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। চলতি মাসের যে কোনো সময় কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব।

গত বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সভায় সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, মুখপাত্র উমামা ফাতেমাসহ কয়েকজন নির্বাহী সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠক—এই চার পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে কাউন্সিলর হবেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং সেল সম্পাদকরা। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ২৩ জন এবং সেল সম্পাদক আছেন ১৫ জনের অধিক। তাদের ভোটেই নির্বাচিত হবে নতুন নেতৃত্ব।

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করার পর কমিটি বিলুপ্ত করা না হলেও শীর্ষ পদগুলো ফাঁকা থাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। জাতীয় নাগরিক পার্টিতে পদ পান আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল এবং মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদসহ সংগঠনটির অনেকেই। এতে ভেঙে পড়ে সংগঠনটির চেইন অব কমান্ড। গত এক মাসে একাধিকবার কমিটি ঘোষণার চেষ্টা করা হলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে তা করতে পারেননি নীতিনির্ধারকরা। কমিটি ঘোষণা ঘিরে একাধিক ভাগে ভাগ হতে দেখা যায় সংগঠনটির। ঘটেছে হাতাহাতির মতো ঘটনাও।

সংগঠন সূত্রে জানা যায়, সভাপতি পদে নির্বাচন করতে পারেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান মুখপাত্র উমামা ফাতেমা এবং অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলের সম্পাদক হাসান ইনাম। অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মালিহা নামলা, মইনুল ইসলাম ও সিনথিয়া জাহীন আয়েশা। তবে মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠক পদে কারা লড়বেন, সেটি জানা যায়নি।

নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইকে স্বাগত জানিয়েছেন শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা। অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলের সম্পাদক হাসান ইনাম কালবেলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃত্ব শূন্য অবস্থায় আছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অতিদ্রুত এই শূন্যতা দূর করা প্রয়োজন। কাউন্সিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে যারা নেতৃত্ব আসবেন, তাদের ওপর দায়িত্ব বর্তাবে সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে যেসব অরাজকতা চলছে, সেগুলো দূর করা, প্ল্যাটফর্মকে দুর্নীতিমুক্ত করা ও সর্বজনীন করে তোলা।’ তিনি বলেন, ‘শহীদ পরিবার, আহত ও গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি। বড় পরিসরে যদি কাজের সুযোগ আসে, সেটাকে কাজে লাগাব।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও নির্বাহী সদস্য সিনথিয়া জাহীন আয়েশা কালবেলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃত্বহীন রয়েছে। এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য থেকে একটি নতুন রাজনৈতিক দল এবং একটি ছাত্র সংগঠন গঠিত হয়েছে। নেতৃত্বে থাকা আহ্বায়ক, সদস্য সচিবসহ অনেক দায়িত্বশীল নতুন রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠনের যুক্ত হওয়ায় এই শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সুতরাং দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব বাছাই করা অত্যাবশ্যকীয়। নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে সুযোগ সৃষ্টি করা হলে প্রকৃত যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসবে বলে আমি মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদ পরিবার এবং আহত যোদ্ধাদের জন্য কাজ করতে চাই। তাদের পুনর্বাসন, যথাযথ মূল্যায়ন, আহতদের সঠিক চিকিৎসা এবং গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ ছাড়া সারা দেশে এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে যেন কেউ অনৈতিক, অবৈধ সুযোগ কিংবা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ থাকবে। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য আমাদের লড়াই এবং সাংগঠনিক পথ চলা অব্যাহত থাকবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য ও এনসিপির সংগঠক আসাদ বিন রনি কালবেলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও আমরা নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছি। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে সবাই একমত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এবং সেল সম্পাদকদের ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত হবে। নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মটি জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব ও এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘কিছু সংকটের কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি ঘোষণায় বিলম্ব হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব চূড়ান্ত করব। চলতি মাসের মধ্যেই আশা করি নতুন নেতৃত্ব পাব।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাজে আসবে পরিবর্তন। নতুন করে তারা আর কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের উদ্যোগ নেবে না। জুলাইয়ের স্মৃতি রক্ষায় সভা, সেমিনার, শহীদ এবং আহতদের নিয়ে কাজ করবে সংগঠনটি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রাখতে মূলত সংগঠনটি রাখা হবে। আন্দোলনের সময় যেভাবে সব দলমত নির্বিশেষে তারা সমর্থন পেয়েছিল, এখন বিভিন্ন কারণে সীমিত হওয়ায় নতুন নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com