1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৫ অপরাহ্ন

ঐতিহ্যবাহী বিজু উৎসব শুরু, আজ

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

রাঙামাটি রাজবন বিহার ঘাট ও কেরানী পাহাড় এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের তীরে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার সকালে বিজু সাংগ্রাই বৈসু বিহু, বিষু চাংক্রান উৎসব শুরু হয়েছে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ তরুণীরা নিজ নিজ জাতীয় ঐতিহবাহী পোশাকে সেজে হাতে ফুল, পাতা দিয়ে কাপ্তাই হ্রদের তীরে গঙ্গা মায়ের উদ্দেশে ফুল উৎসর্গ করেন।

এই উৎসব চাকমা জনগোষ্ঠী ‘ফুল বিজু’, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ‘হারিবসু’ নামে পরিচিত। ঠিক ফুল বিজুর নামে অভিহিত না হলেও এ দিন প্রায় সব পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীই পানিতে গঙ্গা মায়ের উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন করেন।

রাজবন বিহার ঘাট ও কেরানী পাহাড় ছাড়া ও জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়িরা ফুল ভাসিয়ে দিনটি শুরু হয়। ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিবৈসু উপলক্ষে রাঙামাটির গর্জনতলী মধ্যদ্বীপসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে এবং ব্যক্তিগত উদ্যেগে পানিতে ফুল নিবেদন করা হয়। পুরনো বছরের দুঃখ-বেদনা যেন ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার আলো জ্বালান পাহাড়ের বাসিন্দারা। পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানান ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।

কাপ্তাই হ্রদে ফুল নিবেদন করে টিটন চাকমা গতকাল শনিবার বলেন, ফুল বিজুর দিনে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন আমাদের ঐতিহ্য। পাশাপাশি আজকে থেকেই বর্ষবরণের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আজ মূল বিজু এবং আগামীকাল গজ্জেপোজ্যা দিন পালন করা হবে। ফুল নিবেদন করে আমরা গঙ্গাদেবীর কাছে সুখ ও সমৃদ্ধি প্রার্থনা করি।

বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু-বিষু-বিহু-সাংক্রাই-চাংক্রান-পাতা উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে কাপ্তাই হ্রদে ফুল নিবেদনের মাধ্যমে তাদের চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষ করেছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, বিজু মানে চেতনা, বিজু মানে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলার প্রেরণা দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ যে বঞ্চনা ও লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন, সেটা দূর হয়ে একসাথে পথ চলার শক্তি এই বিজু। বিজুর মাধ্যমে সবার মাঝে কল্যাণের বার্তা পৌঁছে যাক।

বিজু সাংগ্রাই, বিষু বিহু চাংক্রান উপলক্ষে গত ১০ দিন ধরে বিভিন্ন মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাসহ আরও নানান আয়োজন চলছে, যা আরও এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২টি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলা বর্ষকে বিদায় জানানোর এ অনুষ্ঠান তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত। এই উৎসব চাকমা জনগোষ্ঠী বিজু নামে, মারমা জনগোষ্ঠীর মানুষ সাংগ্রাই, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষ বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী বিষু, অহমিয়া জনগোষ্ঠীর মানুষ রঙালী বিহু, ম্রো জনগোষ্ঠীর মানুষ চাংক্রান উৎসব নামে পালন করে থাকেন।

আজ চৈত্র সংক্রান্তি : আজ চৈত্র মাসের শেষ দিন। বাংলা বছরের শেষ দিন হওয়ায় এই দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। তাই দিনটিকে চৈত্র সংক্রান্তি হিসেবেই উদযাপন করা হয়। একই সঙ্গে ঋতুরাজ বসন্তকে বিদায় জানিয়ে বাঙালির সামনে আগামীকাল সোমবার হাজির হচ্ছে আরও একটি নতুন বছর ১৪৩২। পহেলা বৈশাখকে বরণ করার জন্য রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষ সব ধরনের প্রস্তুতিও প্রায় শেষের দিকে।

বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরনোকে বিদায় ও আগামীকাল নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তি ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের। সারাদেশের বাঙালিরা মেতে উঠবে বর্ষবরণের উৎসবে। নতুন দিনের বার্তা নিয়ে বৈশাখ উদযাপন করবে বাঙালিরা। বাংলা মাসের শেষ দিনটিকে ঘিরে লোকাচার অনুসারে নানান আয়োজন করে থাকে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে প্রধানত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এটি নানান আড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকে। কালক্রমে বাঙালির সংস্কৃতিতেও কম বেশি লেগেছে বদলের বাতাস।

চৈত্র সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসে লোক উৎসব। গ্রামগঞ্জেও বসে মেলা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের পসরা। বিশেষ করে হালখাতার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি। সারাদেশের মতো রাজধানীর বিভিন এলাকায়ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানান আয়োজনে চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপন করা হবে।

চড়ককে চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব বলা হয়। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অংশ। এ উপলক্ষে গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য গ্রামের শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে।

এদিকে চৈত্র সংক্রান্তিতে ১৪৩২-কে স্বাগত জানাতে এখন উন্মুখ বাঙালি। বৈশাখকে বরণ করার জন্য সাজগোজের পাশাপাশি সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। আগামীকাল নানান আয়োজনে নতুন বর্ষকে বরণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com