ভারতের মণিপুর রাজ্য আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, পরিস্থিনি নিয়ন্তণে নিরাপত্তাবাহিনী বল প্রয়োগ করলে এক কুকি যুবক নিহত হয়।
এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলা চালালে কমপক্ষে ২৭ জন নিরাপত্তাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হরতাল ডেকেছে কুকিরা।
শনিবার সকাল থেকে মণিপুরে রাস্তাঘাট ‘সচল’ করার প্রয়াসে নামে পুলিশ ও সেনার যৌথ দল। তবে সারাদিনেও পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি।
এ সময় মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারায় এক কুকি বিক্ষোভকারীর। শনিবার সারাদিনে রাজ্য জুড়ে পৃথক হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৭ জন নিরাপত্তাকর্মী।
এর পরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালের ডাক দিয়েছে কুকিদের সংগঠন। সকালে রাজধানী ইম্ফল থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায় যান চলাচল রুখতে পথ অবরোধ করেছিলেন কুকি জনগোষ্ঠীর কিছু নারী।
তাদের ছত্রভঙ্গ করে নিরাপত্তা বাহিনী লাঠিচার্জ শুরু করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। তাতে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী আহত হন।
বিক্ষোভকারীরা পাল্টা বাস লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। কয়েকটি গাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেন তারা। তখনই নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এক তরুণের।
মণিপুর পুলিশের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ওই ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর অন্তত ২৭ জন কর্মীও আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তবে এত কিছুর পরও দমছেন না কুকি বিক্ষোভকারীরা। কুকি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। নবগঠিত কুকি-জো কাউন্সিল (কেজেডসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে শান্তি না ফেরা পর্যন্ত এবং কুকিদের রাজনৈতিক দাবিদাওয়াগুলি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের ‘অবাধ চলাচল’ উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করবেন তারা।
‘বাফার জোন’গুলিতে যাতে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য মেইতেইদের অবাধ চলাচল বন্ধ রাখতে চাইছেন কুকিরা।
প্রসঙ্গত, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগের পর সেখানে শুরু হয়েছে কেন্দ্রের তথা রাষ্ট্রপতির শাসন। মণিপুরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লা।
গত ২ মার্চ ভল্লা এবং অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মণিপুরের পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। বৈঠকের পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের সব রাস্তা যেন সচল থাকে।
রাজ্যের রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষ যেন বিনা বাধায় চলাচল করতে পারেন। কেউ রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করলে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণেরও নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কড়া নির্দেশ সত্ত্বেও শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অশান্তি অব্যাহত ছিল।
Leave a Reply