1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৭ অপরাহ্ন

দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ উপকূল ভাঙনের মুখে

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ উপকূল। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটি না হওয়ায় আগামী বর্ষায় বঙ্গোপসাগর এবং নদীতীরবর্তী অঞ্চল ভাঙনের কবলে পড়তে পারে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপথ।

জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড চলমান কাজের সাথে সংহতি রেখে চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার অবশিষ্ট অরক্ষিত অংশ সুরক্ষায় ৮৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং বোয়ালখালী সুরক্ষায় ১৩৪ কোটি ৯ লাখ টাকাসহ মোট এক হাজার আট কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পৃথক পৃথক প্রকল্প প্রণয় করে যা গত বছরই একনেকের সভায় অনুমোদিত হয়। এর পরে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলেও গত দুই মাস ধরে কাজ শুরু করতে পারেনি বাপাউবো।

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ সমগ্র জেলা। এতে হাজার হাজার বসতবাড়ি বিধ্বস্ত এবং প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ প্রাণ হারায়। এ ছাড়া শত শত কিলোমিটার সড়কপথ, সেতু ও কালভার্ট বিনষ্ট হয়। হাজার হাজার একর ফসলিজমি নদী ও সাগরে বিলীন হয়। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন সময়ে নদী ও সাগর উপকূল প্রতিরক্ষায় শত শত কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে।

পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী ও বোয়ালখালী উপজেলার বিস্তীর্ণ নদীতীরবর্তী বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সাগর উপকূল সুরক্ষায় প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রটেক্টিভ ওয়ার্ক ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এতে সাগর ও নদীর সিংহভাগ এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ হওয়ায় কয়েক লাখ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু অবশিষ্ট অরক্ষিত অংশের সুরক্ষায় পৃথক পৃথক প্রকল্প প্রণয়ন করলেও তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
প্রণয়নকৃত প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালী আনোয়ারা টেকসই সুরক্ষা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পোল্ডার নম্বর ৬৪/১এ ৩.৬১০ কিলোমিটার ৬৪/১সি ২.৮০০ কিলোমিটার ও ৬৩/১এ ৫.১৭৫ কিলোমিটারের ঢাল পুর্নাকৃতিকরণ ও সংরক্ষণ কাজ এবং পোল্ডার নম্বর ৬৪/১এ ১.১০০ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ। অপরদিকে বোয়ালখালী সুরক্ষায় ১০ প্যাকেজে রয়েছে ৬.৫১৫ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ।
সম্পন্ন হওয়া কাজের মধ্যে বাঁশখালী ২৯৩.৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬ প্যাকেজের কাজ শুরু হয়। এতে বাঁশখালী উপকূলের ভাঙন আতঙ্কে থাকা হাজার পরিবারের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। গৃহীত প্রকল্পের মধ্যে বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ দুই কিলোমিটার, নদীতীর সংরক্ষণ করা হয় চার হাজার ৮৪৮ কিলোমিটার এবং সাগর উপকূল সুরক্ষায় (স্লোব প্রটেকসন) ১১ প্যাকেজে ৯.৬ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়। এতে ব্যয় হয় ২৮৩ কোটি টাকা এবং সাশ্রয় হয় ১০ কোটি টাকার ওপরে। সমাপ্ত হওয়া কাজের মধ্যে রয়েছে বঙ্গোপসাগর উপকূল বাঁশখালীর ছনুয়া এলাকায় ২.৫৫ কিলোমিটার, গন্ডামারায় ১.৪০ কিলোমিটার এবং খানখানাবাদে ৩.৯ কিলোমিটার সুরক্ষা কাজ। অপরদিকে ছনুয়া এলাকার কাজ নিয়ে বিপত্তি বাঁধলে পরবর্তীতে নতুন ঠিকাদার দিয়ে ২.৫৫ কিলোমিটার এলাকা সুরক্ষিত করা হয়। তবে সমাপ্ত হওয়া খানখানাবাদের ৩.৯ কিলোমিটার কাজের মধ্যে কদমরসুল এলাকার প্রায় ১.৩ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা কাজ টেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি।

এদিকে দুই উপজেলার সুরক্ষা প্রকল্প কাজের সাথে সংগতি রেখে অবশিষ্ট অরক্ষিত এলাকা সুরক্ষায় বাপাউবো বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলা যৌথভাবে ৮৮.৭০ হেক্টর বনায়নসহ ৮৭৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরে নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করে, যা গত বছর একনেকের সভায় অনুমোদিত এবং কার্যাদেশ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

তবে, শুষ্ক মৌসুম শেষ হতে চললেও প্রকল্প কাজের কোনো খবর নেই। বাপাউবো সূত্রে জানা গেছে, নতুনভাবে গৃহীত প্রকল্পে অনুমোদিত ডিপিপি মূলে বাঁশখালী অংশে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০৪ কোটি ৪৫ টাকা। এতে টেকসই কাজের প্যাকেজ রয়েছে ১৫টি। কাজের মধ্যে রয়েছে বাঁধ পুনাকৃতিকরণ ও ঢাল সংরক্ষণ কাজ ৬.৪১০ কিলোমিটার এবং নদীতীর সংরক্ষণ কাজ ১.১০০ কিলোমিটার। কাজের মধ্যে আরো আছে খানখানাবাদের ২.৬১০ কলোমিটার, বাহারছড়ায় এক কিলোমিটার বাঁধ পুনাকৃতিকরণ ও ঢাল সংরক্ষণ এবং সাধনপুরে ১.১০০ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণের কাজ।

একই প্রকল্পে আনোয়ারা অংশে ৩৬৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে টেকসই সুরক্ষা কাজ রয়েছে আট প্যাকেজ বাঁধ পুনাকৃতিকরণ ও ঢাল সংরক্ষণ ৬.৪১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে রয়েছে আনোয়ারা রায়পুর ইউনিয়নে ২.৭৭৫ কিলোমিটার এবং জুঁইদণ্ডি ইউনিয়নে ২.৪০০ কিলোমিটার সুরক্ষা কাজ।

নতুন গৃহীত প্রকল্পের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি) বাপাউবোর চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খ ম জুলফিকার তারেক বলেন, চলমান কাজের সাথে সঙ্গতি রেখে বাঁশখালী ও আনোয়ারায় সাগর উপকূল ও নদীতীর সুরক্ষায় গৃহীত প্রকল্প কাজের দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই কাজ শুরু হবে। তবে ইতোমধ্যে আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com