দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় এসেই সরকারে বড় আকারে সংস্কার চালাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের পর এবার দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সব কর্মীকে সুনির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার বিকল্প দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার সিআইএর পরিচালক জন র্যাটক্লিফের এক সহকারীর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। এবার ট্রাম্পের অন্যতম লক্ষ্য কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ কমানো। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মীদের ঐচ্ছিক অবসরে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সিআইএর কর্মকর্তাদের সামনে এই বিকল্প উপস্থাপন করা হয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে এই সংস্থায় নতুন কর্মীদের নিয়োগ স্থগিত করেন। এমনকি যারা নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তারাও আপাতত কাজে যোগ দিতে পারছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইএ কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যে নিয়োগপত্র পাওয়া অনেকেরই নিয়োগ বাতিল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে এজেন্সির নতুন লক্ষ্যের সঙ্গে ওই প্রার্থীর যোগ্যতা মিলিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ট্রাম্পের এই উদ্যোগে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ-আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল-ইউএনএইচআরসিসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করতে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র জন্য অর্থায়ন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পর্যালোচনা করা হবে বলেও জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
নিজের প্রথম মেয়াদেও জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে ইসরায়েলবিরোধী বলে অভিযোগ করে সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর তেল আবিবের চাপেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, জাতিসংঘের অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে এটি সেই সম্ভাবনার জায়গায় নেই। যেসব দেশ ন্যায্যতা দাবি করে, তাদের প্রতি জাতিসংঘের ন্যায়সংগত আচরণ করা উচিত। এর আগে ২০১৮ সালে ট্রাম্প জুনে মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।
সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) কর্মীদের শুক্রবার থেকে প্রশাসনিক ছুটি দিয়ে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প সরকারের জারি করা এক নির্দেশের বরাত দিয়ে এমনটি জানিয়েছে সিএনএন। সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের সব কর্মী বিশ্বব্যাপী প্রশাসনিক ছুটিতে যাবে। শুধু মিশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে, মূল নেতৃত্বে এবং বিশেষভাবে মনোনীত কর্মসূচিগুলোর দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা এর বাইরে থাকবেন। সংস্থাটির কার্যক্রম বন্ধে ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকে বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার আবার অনলাইনে ফিরে আসে।
Leave a Reply