1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৮ অপরাহ্ন

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনীতির হারিয়ে যাওয়া এক অধ্যায়

আলতাফ পারভেজ
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫

বাংলাদেশের কূটনীতি পুরোনো দিনের দেয়ালঘড়ির লম্বা দোলকের মতো। ডানে-বাঁয়ে দুলতে থাকে সেটা। গত দেড় দশক সেটা দুলে একদিকে হেলে পড়ে ছিল। এখন হয়তো অন্যদিকে চলার পালা। বিগত সময়ে অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বাভাবিক ‘ভালো’ ছিল, অনেকের সঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে খারাপ গেছে। এখন আবার ‘অস্বাভাবিক’ অধ্যায় সংশোধনের কথা হচ্ছে। ঠিক এ সময়ই পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের হারিয়ে যাওয়া যোগাযোগগুলোর খোঁজ পড়েছে। দুই দেশের কূটনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদদের মধ্যে কথাবার্তার চল বেড়েছে আবার।

২০২৪–এ বাংলাদেশ-পাকিস্তান পারস্পরিক স্বীকৃতির ৫০ বছর হলো। ফলে মুহূর্তটা বেশ উদ্‌যাপনের মতো। এ রকম একটা ‘শুভক্ষণে’ নতুন করে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টার সময় স্বাভাবিকভাবে একটা প্রশ্ন আসে যে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দায়দেনার পুরোনো স্পর্শকাতর প্রসঙ্গটার ফয়সালা হবে কি না। দুই দেশের সম্পর্কের বেশ গোড়ার একটা অমীমাংসিত বিষয় সেটা।

এগোতে হলে পেছনের অমীমাংসিত বিষয়ের ফয়সালা জরুরি

ইউরোপের দেশগুলো ‘ইউনিয়ন’ গড়ে একসঙ্গে চলছে ৩১ বছর হলো। দক্ষিণ এশিয়ার জাতিগুলোর দুর্ভাগ্য। তারা প্রথমে কয়েক খণ্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে নিয়েছে এবং তারপর ইইউর মতো কোনো ইউনিয়ন আকারেও কাছাকাছি থাকতে পারেনি। এমনকি স্বাভাবিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও রাখে না তারা অনেক সময়।

সামান্য মন–কষাকষি হলেই পরস্পরের নাগরিকদের জন্য ভিসানীতি কঠোর করে ফেলে। এ রকম ‘কিশোর-কিশোরীসুলভ’ মনস্তত্ত্বের কারণে এসব দেশের মধ্যে প্রত্যাশিত বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এগোয়নি। বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক একই রকম এক দুর্ভাগ্যের শিকার।

পাকিস্তানে বাংলাদেশের রপ্তানি ব্যবসা ১০০ মিলিয়ন ডলারও নয়। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৫০০ ভাগের ১ ভাগও পাকিস্তানে যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান কিছুটা এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের দিক থেকে বাড়তি শুল্কের কারণে এখানে পাকিস্তানি পণ্যের আগমনও কঠিন হয়েছিল। ওই দেশ থেকে আসা পণ্য চালানে নজরদারি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে কঠোর করে রাখা হয়েছিল বিগত দিনগুলোতে। বহুকাল হলো পিআইএর সরাসরি ফ্লাইটও নেই ঢাকায়।

এ রকম অবস্থা নিশ্চিতভাবে পাল্টানো দরকার। উভয় দেশ মিলে ৪০ কোটির বেশি মানুষের বাজার। স্বাভাবিক কূটনীতিক সম্পর্ক থাকলে এই বিশাল বাজার দুই দেশের উদ্যোক্তাদের অনেক কিছু দিতে পারে। বাংলাদেশের কাঁচা পাট থেকে ওষুধ পর্যন্ত বহু পণ্যের জন্য পাকিস্তান ভালো বাজার হতে পারে। সম্প্রতি উভয়ের দেশের বণিক সমিতিগুলো মিলে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে একটা নতুন ‘কাউন্সিল’ও গঠন করেছে। কিন্তু বণিকদের একার পক্ষে আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক মসৃণ করা দুরূহ। সে কাজটি পারেন কেবল রাজনীতিবিদেরা।

অমীমাংসিত বিষয় কম, কিন্তু জটিলতা অনেক

বাংলাদেশ-পাকিস্তানকে সামনে এগোতে হলে তাদের সম্পর্কের পুরোনো কিছু দায় মিটিয়েই এগোতে হবে। এর মধ্যে একদা বড় বাধা হয়েছিল বাংলাদেশে আটকে পড়া উর্দুভাষীদের নেওয়ার প্রসঙ্গ। বাংলাদেশ যেহেতু তাঁদের ভোটাধিকার দিয়ে দিয়েছে, সে কারণে পাকিস্তান এই দায় থেকে এখন কিছুটা মুক্ত। ঢাকার সরকার নিশ্চিতভাবে এ বিষয়ে দারুণ উদারতার পরিচয় দিয়েছে। আজকের উর্দুভাষী প্রজন্ম কমই পাকিস্তান যেতে চায়।

মুক্তিযুদ্ধোত্তর সম্পদ ভাগাভাগির বিষয়টা নিয়ে উভয় দেশের সরকার আজও কোনো ছাড় বা ফয়সালায় আসতে পারেনি। বিষয়টি অনেক দিন থেকে আলোচনায় না এলেও ভবিষ্যতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে এরও একটা মীমাংসা লাগবে। বিশেষ করে বাংলাদেশের দিক থেকে এখানে এমন স্বার্থ রয়েছে, যাকে ছেড়ে দেওয়া মুশকিল আছে। কারণ, এসব সম্পদে হক রয়েছে জনগণের। কোনো নীতিনির্ধারক সেটার দাবি ছেড়ে দিতে পারেন না।

রাষ্ট্রীয় উত্তরাধিকার ভাগ-বাঁটোয়ারা সম্ভব

পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ২৪ বছর একসঙ্গে ছিল। আলাদা দেশ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই পুরোনো অর্থনীতির দায়দেনা ভাগেরও একটা বিষয় আসে। এর মধ্যে আছে বিদেশে থাকা সম্পদের ভাগ, যুদ্ধের আগমুহূর্তে দেশে জমা থাকা বৈদেশিক মুদ্রার ভাগ, দুই যুগ ধরে পূর্ব পাকিস্তান থেকে রপ্তানি ও তার জন্য আমদানির মাঝখানের উদ্বৃত্তটুকুর হিসাব। আছে বৈদেশিক ঋণের প্রাপ্তি ও দায়ের হিসাব। এসবের সঙ্গে যুক্ত আছে যুদ্ধে এখানকার মানুষের ক্ষতিপূরণের বিষয়।

কিন্তু একাত্তরের পরপর রাজনৈতিক আবেগ ও উত্তেজনার মধ্যে জরুরি এই কাজ নির্মোহভাবে সম্পন্ন হয়নি এবং আজও সেটা ঝুলে আছে। যদিও ইতিমধ্যে ৫৪ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু এটা এমন এক বিষয়, উভয় দেশের নেতাদের এখন যেভাবেই হোক এর একটা মীমাংসা করে ফেলতে হবে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশভাগজনিত বা এক রাষ্ট্র থেকে আরেক রাষ্ট্রের জন্ম বা কোনো দুই অঞ্চলের একত্রীকরণ হলে সে অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় উত্তরাধিকার ফয়সালারও অনেক নজির আছে। কিছু কনভেনশনও আছে এসব বিষয়ে। সেসব থেকে নির্দেশনা নিয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সন্তোষজনক একটা মীমাংসায় আসতে পারে বিবাদিত এ বিষয়ে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ডিসেম্বরে মিসরে ডি-৮ সম্মেলনকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাতে সংগত কারণেই বলেছেন যে ‘পুরোনো বিষয়গুলো বারবার আসছে। সামনে এগিয়ে যেতে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর ফয়সালা করে ফেলা দরকার। বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে।’ এর আগেও তাঁদের দুজনের দেখা হয়েছিল জাতিসংঘের অধিবেশনে।

অতীতে শাহবাজ শরিফের ভাই নওয়াজ শরিফের শাসনামলে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোতে ইসলামাবাদের দিক থেকে সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখা গিয়েছিল। সেই স্মৃতির আলোকে বলা যায়, বর্তমান সময়টা বাংলাদেশ-পাকিস্তান উভয় দিক থেকে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটা ভালো মুহূর্ত। এটা একটা সুযোগও বটে।

বাংলাদেশের জন্য অতীতের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের অনেকে দায়দেনার হিসাব মীমাংসার জন্য বলেছেন। যুদ্ধকালে পাকিস্তানে প্রায় সোয়া চার বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ ছিল। এর একটা অংশ বাংলাদেশের প্রাপ্য বলে অনেকে দাবি তুলেছিলেন।

১৯৭২ সালেই তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এসব বিষয়ে দাবি উত্থাপন করে রেখেছিলেন। চুয়াত্তরে জুলফিকার আলী ভুট্টোর সফরকালে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কিছু হিসাবপত্তরও তুলে ধরা হয়। তখন এ বিষয়ে বাংলাদেশের তরফ থেকে ৪০০ কোটি ডলারের একটা হিসাব সামনে এসেছিল।

ভুট্টো পরবর্তীকালে বাংলাদেশকে একাত্তর–পূর্ববর্তী বৈদেশিক ঋণের ভাগও নিতে বলেন। নেতিবাচকভাবে হলেও এতে সম্পদ ভাগাভাগির একটা যৌক্তিকতা তিনি স্বীকার করেন এবং বাংলাদেশ পরবর্তীকালে অখণ্ড পাকিস্তান আমলের বৈদেশিক ঋণের একাংশ হিসেবে প্রায় ৩৬ কোটি ডলার দায় নিতে নীতিগতভাবে সম্মতও হয়।

দাতাদের চাপে বাংলাদেশ এ রকম সিদ্ধান্তে আসে। তবে দেখা যায়, শুরু থেকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আলোচনার টেবিলে ইতিবাচক ছিল। তবে এ–ও সত্য যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অখণ্ড পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণের দায় গ্রহণ তখনকার বিস্তারিত আর্থিক ভাগ–বাঁটোয়ারার সঙ্গে সম্পর্কিত। ফয়সালা প্যাকেজ আকারেই হতে হবে।

১৯৭৫–এর পর দায়দেনার আলোচনা কিছু সময়ের জন্য থেমে থাকলেও ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শামস উল হকও প্রসঙ্গটি পুনরায় তুলেছিলেন। পাকিস্তান সরকারিভাবে প্রথমদিকে এই বিষয়ে নীরব থাকলেও পরে দেশটির ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে তাঁদের ফেলে যাওয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গ নিয়ে আসেন।

এতে রাষ্ট্রীয় উত্তরাধিকারের দায়দেনার বিষয়ে নতুন জটিলতা যুক্ত হয়। তবে নিশ্চিতভাবে পাকিস্তানের শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের বক্তব্যেও শোনার মতো উপাদান আছে অনেক—বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে পরে কিছু প্রতিকারমূলক পদক্ষেপও নেয়। কিন্তু পাকিস্তান সরকার দায়দেনার রাষ্ট্রীয় উত্তরাধিকারের বিষয়টির সমাধান করতে সব সময় অনিচ্ছুক এবং অস্পষ্ট একটা অবস্থান বজায় রেখেছে চলেছে। এমনকি কখনো কখনো রাষ্ট্রীয় সম্পদ বাঁটোয়ারার প্রসঙ্গকে আড়াল করতেই কেবল সেখানকার প্রচারমাধ্যমে যুদ্ধকালে ফেলে যাওয়া সম্পদের বিষয়টি তোলা হয়।

এ রকম পাল্টা-পাল্টা দাবি উভয় দেশের স্বাস্থ্যকর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পথে একটা বাধা। দরকার হলো এই ইস্যুর এমন এক সমাধান, যেখানে উভয়ে কিছু ছাড় দিয়ে কিছু পেতে পারে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় এ বিষয়ে একটা ইতিবাচক অগ্রগতি হবে বলে সবার প্রত্যাশা।

৫৪ বছর আগে-পরের দায়

এটা সত্য যে মুক্তিযুদ্ধের পর পশ্চিম পাকিস্তানের অনেক শিল্পপতির অনেক পরিত্যক্ত সম্পদ বাংলাদেশে জাতীয়করণ করা হয়েছে। করাচি স্টক একচেঞ্জ এ রকম শিল্পপ্রতিষ্ঠানের একটা হিসাবও করেছিল পরবর্তীকালে। এ রকম সম্পদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ–পরবর্তী সরকারের ব্যবস্থাপনা সঠিক ছিল কি না বা কীভাবে সেই ব্যবস্থাপনার কাজ করা হয়েছে এবং পরে সেসব সম্পদ কোথায় কীভাবে বণ্টিত হলো, এ বিষয়েও ব্যাপকভিত্তিক অনুসন্ধানের দরকার আছে।

অনেকের কাছে এটা একটা ‘প্যান্ডোরার বক্স’ মনে হবে। কিন্তু ইতিহাসের দায় এড়িয়ে যাওয়া প্রকৃতই দুঃসাধ্য। ১৯৭২ সালে যা শুরু হতে পারত, ২০২৫ সালেও সেটা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ মিলছে না। অন্তত পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হলে এ রকম বিষয়গুলো আসবেই। সরকারি না হলেও বেসরকারিভাবেও সামনের দিনগুলোতে অনেকে এসব প্রশ্ন তুলতে পারেন। আবার উভয় দেশের সরকার এ রকম বিষয় এড়িয়ে যেতে চাইলে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে সেসব উঠতে পারে।

টেকসই ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে অতীতের ন্যায্যতার ওপর

বিগত দিনগুলোতে উর্দুভাষীদের ফেরত নেওয়া এবং যুদ্ধাপরাধের বিষয় পাকিস্তান-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় ছায়া বিস্তার করে থাকত। এখন যেহেতু উর্দুভাষীদের বিষয়টি বাংলাদেশ তার মতো করে সমাধান করছে, তখন পাকিস্তানের দিক থেকে দায়দেনা মীমাংসার বিষয়ে ইতিবাচক প্রস্তাব আসতে পারে। এমনকি দুই দেশ নিজেরা এসব নিয়ে আলোচনায় বিব্রতবোধ করলে এ বিষয়ে ওয়াইসি বা জাতিসংঘের কারিগরি সহযোগিতা নিতে পারে।

এ রকম উদ্যোগ সম্ভাব্য বাণিজ্যিক, কূটনীতিক ও ভূরাজনৈতিক সহযাত্রায় বেশ গতি দেবে। তবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চলতি উদ্যোগগুলো দায়দেনা ভাগাভাগির অপেক্ষায় আটকে রাখার প্রয়োজন পড়ে না। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চালসহ আরও কিছু পণ্য আনার উদ্যোগ নিয়েছে; অর্থাৎ শিগগির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পরিসর বাড়বে।

কিন্তু যেকোনো স্বাভাবিক সম্পর্ক অতীতের ন্যায়ভিত্তিক স্বচ্ছ চিত্রও দাবি করে। অতীতের ন্যায্যতার ওপর ভবিষ্যৎ টেকসই হয়। এর মধ্যেবিশেষ করে ১৯৭০–এর নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ের বিপরীতে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে যে সাহায্য এসেছিল এবং চার মাস পর যুদ্ধ লেগে যাওয়ায় যে অর্থ (প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার) বিতরণ হয়নি, সেটা পাকিস্তানের অবিলম্বে দেওয়া উদ্দীপনামূলক নজির হতে পারে।

খুবই নিকট অতীতের অভিজ্ঞতা হলো, তিস্তার পানির হিস্যার ফয়সালা না করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘অনেক উচ্চতা’য় নিয়েও ধরে রাখা যায়নি। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কও অনেক উচ্চতায় ওঠার পরও একাত্তর–পূর্ববর্তী অর্থনৈতিক দায়দেনার অমীমাংসিত বিষয় কখনো না কখনো সামনে চলে আসবে। মানুষ তখন এ–ও ভাবতে পারে, পানির হিস্যার বিষয় যদি আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ হয়ে উঠতে পারে, তাহলে অর্থকড়ির বিষয় নয় কেন?

  • আলতাফ পারভেজ, ইতিহাস বিষয়ে গবেষক

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com