1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন

খেলাপি ঋণে জর্জরিত এক তৃতীয়াংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে (এনবিএফআই) খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর- এই তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। আর ৯ মাসের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ খাতে খেলাপি ২৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৫ শতাংশ। এ সময়ে অন্তত ২২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার অতিমাত্রায় রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপির হার ৪৪ থেকে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে, এর মধ্যে ৯টির ৮০ শতাংশের বেশি। বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ক্রমশ বাড়ছে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে ৩৫টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। তিনটি সরকারি, ১২টি দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানায় এবং বাকিগুলো দেশীয় ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি বাদে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান তারল্য সংকটে ভুগছে। মূলত আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার কাণ্ডের পর ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় আমানত টানতে পারছে না খাতটি। পাশাপাশি ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ থাকার কারণে অনেকে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ক্রমেই বাড়ছে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকির অভাবেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে- ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৬ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৩৫.৫২ শতাংশ। তিন মাস আগে গত জুন পর্যন্ত এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা বা ৩৩.১৫ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা বা ২৯.২৭ শতাংশ। সে হিসেবে ৯ মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা বা ২১.৩১ শতাংশ। অন্যদিকে গত সেপ্টেম্বর শেষে আদায়-অযোগ্য তথা মন্দঋণের স্থিতি বেড়ে হয়েছে ২২ হাজার ৪০২ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের ৮৫.৬৩ শতাংশ।

তিন মাস আগে গত জুনে এ ধরনের ঋণের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৩৩ কোটি টাকা বা ৮৫.১১ শতাংশ।

দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থা নতুন নয়। আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি পিকে হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করেছেন, পুরো খাত এখন তার জের টানছে। পিকে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যে কারণে সার্বিকভাবে এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এফএএস বা ফার্স্ট ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণের হারই এখন বেশি। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা ঋণের ৯৯.৯২ শতাংশ বা ১ হাজার ৮২০ কোটি টাকাই খেলাপি হয়ে গেছে। ফারইস্ট ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণের হার ৯৮.০৬ শতাংশ বা ৮৭৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) খেলাপির হার ৯৭.২৭ শতাংশ বা ৭৫১ কোটি টাকা। পিপলস লিজিংয়ের খেলাপি ঋণের হার ৯৭ শতাংশ বা ১ হাজার ২৬ কোটি টাকা। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের খেলাপি ঋণের হার ৯৬.১৯ শতাংশ বা ৩ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। ইউনিয়ন ক্যাপিটালের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা বা ৯৪.৬০ শতাংশ। আভিভা ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বা ৮৯.৮১ শতাংশ। ফিনিক্স ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ৮৮.৫৭ শতাংশ। ফার্স্ট ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ ৮৭.৮২ শতাংশ বা ৬৬৮ কোটি টাকা। এ ছোড়া প্রাইম ফাইন্যান্সের ৭৭.৬২ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৭৫.২০ শতাংশ, আইআইডিএফসির ৬৬.৭৪ শতাংশ, বে লিজিংয়ের ৬৫.৮৭ শতাংশ, ন্যাশনাল ফাইন্যান্সের ৬৩.০৩ শতাংশ, সিভিসি ফাইন্যান্সের ৫৯.৫৪ শতাংশ, জিএসপি ফাইন্যান্সের ৫৮.২৪ শতাংশ, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্সের ৫৭.৬৯ শতাংশ, উত্তরা ফাইন্যান্সের ৫৬.৩৬ শতাংশ, হজ ফাইন্যান্সের ৫৫.৪৫ শতাংশ, মাইডাস ফাইন্যান্সের ৪৮.৯৮ শতাংশ, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৪৮.৬৫ শতাংশ ও বাংলাদেশ ফাইন্যন্সের ৪৪.৩৪ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com