২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এগিয়ে আসবে মাধ্যমিকের সব শ্রেণীর বার্র্ষিক পরীক্ষা। এতে ক্লাসরুমের শিখন সময়ে কিছুটা ঘাটতিও হবে। কিন্তু তার পরেও প্রতি বছর জানুয়ারির প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। একই সাথে বছরের শুরু থেকেই শ্রেণী শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেই শিক্ষাবর্ষের ১২ মাসের মধ্যে ৪০ দিনের এই ঘাটতি রাখা হচ্ছে।
তবে ক্লাসরুমের কাজে যাতে কোনো প্রকার ঘাটতি বা ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় সে জন্য প্রত্যেক শ্রেণীর পরীক্ষা ১২ কর্ম দিবসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা থাকবে শিক্ষাপঞ্জিতে। ইতোমধ্যে এই ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিক্ষাপঞ্জির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে এটা চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে সরকারি-বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রতি বছর শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে ২০২৫ সালের শিক্ষাপঞ্জির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর অর্ধ-বার্ষিক, প্রাক-নির্বাচনী, বার্ষিক ও নির্বাচনী পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ জানানো হয়েছে। অনুমোদনের পর শিগগির চূড়ান্ত শিক্ষাপঞ্জিটি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
সূত্র জানায়, আগামী বছরের খসড়া শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী (২০২৫) ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে ২৪ জুন, যা চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত । একই সময়ে দশম শ্রেণীতে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া হবে। ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে অর্ধ-বার্ষিক ও প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে।
দশম শ্রেণীতে নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে ১৬ অক্টোবর। এ পরীক্ষা চলবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। একই সঙ্গে শিক্ষাপঞ্জিতে নির্বাচনী পরীক্ষার ফল ১০ নভেম্বরের মধ্যে প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীতে আগামী শিক্ষাবর্ষে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে ২০ নভেম্বর, যা চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ পরীক্ষার ফল ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। প্রত্যেকটি পরীক্ষা ১২ কর্মদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে বলেও শিক্ষাপঞ্জিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক অনুবিভাগের একটি সূত্র জানায়, আগামী বছরের শিক্ষাপঞ্জির খসড়া অনুমোদনের জন্য অপেক্ষায় আছে। তবে পরীক্ষার যে তারিখগুলো বলা হয়েছে বা ছুটির যে বিষয়গুলো রয়েছে, তাতে খুব বেশি পরিবর্তন আসবে না। দ্রুত এটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে।
অবশ্য শিক্ষাপঞ্জিতে ৪০ দিনের ঘাটতির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মাধ্যমিক শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ (সোহেল) নয়া দিগন্তকে জানান, ক্লাসরুমের শ্রেণী শিক্ষা কার্যক্রমের এই ঘাটতি নতুন কোনো বিষয় না। প্রতি বছরই নভেম্বরের শেষ দিকেই স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়। এর পর খাতা মূল্যায়ন ও রেজাল্ট প্রকাশের জন্য একটি সময় নির্দিষ্ট করে দিতে হয়। এ কারণেই প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস মূলত শ্রেণী শিক্ষাকার্যক্রমের আওতায় ধরা হয় না। কেননা বছর শেষে জানুয়ারির প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পায়। ফলে নবেম্বরের মাঝামাাঝি থেকে ডিসেম্বর মাসজুড়েই স্কুলগুলোতে পরীক্ষা ও রেজাল্ট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়।
Leave a Reply