এক ফিলিস্তিনি বন্দীকে বলাৎকার করার অভিযোগে অন্তত ৯ ইসরাইলি সৈন্যকে আটক করেছে দেশটির সামরিক পুলিশ। এর প্রতিবাদে উগ্রপন্থী ইসরাইলিরা বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটের কয়েকজন উগ্রপন্থী সদস্যও রয়েছেন। দক্ষিণ ইসরাইলের সদে টেইমান ডিটেনশন সেন্টারে এ ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষোভকারীরা সোমবার ডিটেনশন সেন্টারে জোর করে ঢুকে পরে। তারা ইসরাইলি পতাকা দুলিয়ে সৈন্যদের আটক করা প্রতিরোধ করে, স্লোগান দেয়, ‘শেম’ বলে। বিক্ষোভকারীরা জানায়, সৈন্যরা তাদের কর্তৃব্য পালন করেছে। মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেশ কয়েকজন ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিক সৈন্যদের সমর্থনে ছুটে যান।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আটককেন্দ্রে প্রবেশ করার নিন্দা করেছেন। তবে তার অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ অপকর্মে সন্দেহভাজন সৈন্যদের ‘বীর যোদ্ধা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আর জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির ওই সৈন্যদের ‘শ্রেষ্ঠ বীর’ হিসেবে অভিহিত করে তাদের আটককে ‘লজ্জাজনক’ ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন।
কয়েকজন বিক্ষোভকারী স্থাপনাটি ভাঙার চেষ্টাও করেন বলে জানা গেছে। বিক্ষোভকারীরা বেইত লিড সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশের চেষ্টাও করে। এখানেই আটক সৈন্যদের রাখা হয়েছে।
এক সৈন্য হারেৎজ সংবাদপত্রকে বলেন, সামরিক বাহিনীর কয়েকজন সদস্য সৈন্যদের আটক করতে আসা সামরিক পুলিশকে ঠেকাতে পেপার স্প্রেও করে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী সোমবার জানায়, সদে তেইমান স্থাপনায় এক বন্দীর ওপর ‘ভয়াবহ নির্যাতরে’ অভিযোগের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৯ সৈন্যকে আটক করা হয়েছে। এখানে ৭ অক্টোবরে গাজায় অভিযান চালানোর পর সেখান থেকে আটক ফিলিস্তিনিদের রাখা হয়েছিল।
সামরিক বাহিনী কথিত নির্যাতনের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। এটুকুই জানিয়েছে যে এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে ইসরাইলি মিডিয়া জানায়, ভয়াবহভাবে নির্যাতিত হওয়ার পর এক ফিলিস্তিনি বন্দীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ওই লোক হাঁটতে পর্যন্ত পারছেন না। আর আরব৪৮ জানিয়েছে, ওই লোকের ‘পায়ুপথে মারাত্মক ক্ষতের’ সৃষ্টি হয়েছে।
টাইমস অব ইসরাইলের খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটির ব্যাপারে সামরিক পুলিশের তদন্ত শুরু হওয়ার পর ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর অ্যাডভোকেট জেনারেল মেজর জেনারেল ইয়িফাত তোমার-ইয়েরুশালমির নির্দেশে ওই সৈন্যদের আটক করা হয়।
আটক সৈন্যরা ফোর্স ১০০ হিসেবে পরিচিত একটি ইউনিটের সদস্য। তাদের দায়িত্ব ছিল ওই আটক কেন্দ্র পাহারা দেয়া।
ইসরাইলের সেনাপ্রধান বিক্ষোভের নিন্দা করেছেন।
লে. জেনারেল হারেজি হ্যালভি সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সামরিক ঘাঁটিতে ঢুকে পড়া এবং সেখানে শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ফিলিস্তিনিরা অনেক দিন ধরেই ইসরাইলি কারাগার, আটককেন্দ্রগুলোতে নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ বলে আসছিল।
সূত্র : আল জাজিরা, মিডলইস্ট আই, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য
Leave a Reply