লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সাথে ইসরাইলের পুরোপুরি যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ইসরাইল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে রকেট হামলায় ১২ শিশু নিহত হওয়ার পর উত্তেজনা বাড়ছে। অবশ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে সমর্থন করায় ইসরাইলের সাথে গোলা বিনিময় চলছিল।
ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ-র মধ্যেকার সংঘাত যদি শেষ পর্যন্ত পুরোদস্তুর যুদ্ধের দিকে গড়ায়, সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে দেখে নেয়া যেতে পারে তাদের সামরিক শক্তি আসলে ঠিক কতটা!
কোনো দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনী না হয়েও বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক অস্ত্রসম্ভারে সজ্জিত সামরিক শক্তিগুলোর অন্যতম হলো হিজবুল্লাহ। বস্তুত এরকম বাহিনীগুলোর মধ্যে তারাই সবচেয়ে শক্তিশালী, এবং তাদের টাকাপয়সা ও অস্ত্রশস্ত্র জোগায় ইরান।
হিজবুল্লাহ-র প্রধান শেখ হাসান নাসরুল্লাহ-র দাবি অনুযায়ী তাদের প্রায় এক লাখ যোদ্ধা আছেন। যদিও বিভিন্ন নিরপেক্ষ সূত্রে এই সংখ্যাটা ২০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে বলেও বলা হয়।
হিজবুল্লাহ-র এই সদস্যরা সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং তাদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতাও আছে। এদের অনেকেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধেও লড়াই করেছেন।
স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের হিসেব অনুযায়ী, হিজবুল্লাহ-র কাছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার রকেট ও মিসাইল আছে। তাদের এই অস্ত্রভাণ্ডারের বেশিটাই হলো ছোট আকারের, আনগাইডেড ভূমি-থেকে-ভূমি আর্টিলারি রকেট।
তবে হিজবুল্লাহ-র সম্ভারে বিমান ও রণতরী-বিধ্বংসী মিসাইল আছে বলেও ধারণা করা হয়। তা ছাড়া বেশ কিছু ‘গাইডেড’ মিসাইলও আছে, যেগুলো ইসরাইলের অনেক ভেতরে গিয়েও আঘাত হানতে সক্ষম।
গাজা ভূখণ্ডে হামাসের হাতে যে ধরনের অস্ত্রশস্ত্র আছে, তার তুলনায় হিজবুল্লাহ-র এই অস্ত্রভাণ্ডার অনেক বেশি আধুনিক ও বিধ্বংসী।
শিয়া মুসলিম এই সংগঠনটি লেবাননে রাজনৈতিকভাবেও অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং তারা সে দেশের সেনাবাহিনীর চেয়েও অনেকগুণ বেশি শক্তিশালী।
মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী শিয়া শক্তি ইরানের মদতে ইসরাইলের বিরোধিতার লক্ষ্য নিয়েই ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল হিজবুল্লাহ।
বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে হিজবুল্লাহ দক্ষিণ লেবাননে খুব শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে এবং বিতর্কিত সীমান্ত এলাকাগুলোতে ইসরাইলের উপস্থিতির বিরোধিতা করে আসছে।
সূত্র : বিবিসি
Leave a Reply