রোববার সারাদেশে গণ পদযাত্রা কর্মসূচি ও প্রেসিডেন্ট বরাবর স্মারক লিপি প্রদান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। রোববার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে গণ পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করবেন তারা। এদিন বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গণ পদযাত্রা করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বরাবর স্মারক লিপি দিবেন ঘোষণা করা হয়। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেইসঙ্গে ছাত্র ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, বাংলা ব্লকেড কার্যক্রমকে অনেকেই জনদুর্ভোগ বলে আখ্যা দিচ্ছে। আমরা বলতে চাই মা যখন সন্তান প্রসব করেন তখন যন্ত্রণা ভোগ করেন। আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, সব মিলিয়ে ৫ শতাংশ কোটা থাকতে পারে। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের পর্যন্ত কোটা থাকতে পারে।
ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের জোয়ার বাড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেলা উপজেলায় ছড়িয়ে গেছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা কেন ফিরে যাবে? শিক্ষার্থীরা কেন ফিরে যাবে? শিক্ষার্থীরা এত বোকা নয়।
আন্দোলনের শুরুতে তাদের কোন খোঁজ ছিল না। এখন আন্দোলন সফল হবার সময় বিরোধিতা করছে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রত্যাখ্যান করছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের ছাত্র ধর্মঘট চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত। শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাহবাগ থানায় হওয়া মামলা তুলে নিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনে বাধাপ্রদানকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দাবি আদায় না হলে আমরা বৃহত্তর গণ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা ১১ই জুলাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা হয়। চট্টগ্রামে নারী শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধা দেয়। সেইসঙ্গে লাঠিচার্জ করে। অনেক সাংবাদিককেও আহত করা হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি এক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতন করে। আমরা ১লা জুলাই থেকে আন্দোলন করছি। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, ১০ দিনের আন্দোলনে কোনো শিক্ষার্থী কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেনি।
ছাত্রলীগ আন্দোলনে উসকে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ শহবাগ থানায় অজ্ঞাতনামা মামলা হয়েছে। এসময় পুলিশের একটি রেকর্ড শোনান। সেখানে পুলিশকে বলতে শোনা যায়, ‘শিক্ষার্থীরা কোনো ক্ষতি করেনি।’ আমাদের এমন কোনো পুলিশ প্রশাসনকে চাই না। আমরা চাই তাদের স্থানান্তর করে অন্য কোথাও পাঠানো হোক।
আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমাদের আন্দোলন থাকবে যতোদিন পর্যন্ত আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হয়। শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের পেনশন স্কিমের আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে। এখন সময় এসেছে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেখতে চাই না শিক্ষকরা ক্লাসে বসে আছেন। ক্লাস পরীক্ষার জন্য চাপ দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের আন্দোলন দীর্ঘায়িত করতে হচ্ছে। এরদায় পুরোপুরি সরকারের। তারা যদি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয় আমরা রাস্তায় থাকব না। অতিদ্রুত সংসদে আইন পাস করুন।
Leave a Reply