ডায়াবেটিস হলে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সঠিক খাদ্য, সঠিক পরিমাণে ও সঠিক সময়ে গ্রহণের মাধ্যমে রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
অনেকের ধারণা, ডায়াবেটিস হলে খুব বেশি খাওয়া যাবে না– ব্যাপারটি মোটেও এমন নয়। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এমন খাদ্য যেন বেশি না হয়। খাদ্য তালিকায় ক্যালরির জোগান দিতে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শর্করা, ২০ শতাংশ আমিষ ও ৩০ শতাংশ চর্বি অবশ্যই রাখতে হবে।
যেসব খাদ্য খেতে বাধা নেই
এ তালিকায় পড়বে শাকসবজি, টকজাতীয় ফল, তন্তুজাতীয় খাবার, গোটা শস্যদানা, ঢেঁকি ছাঁটা চাল, ভুসিসহ গোটা গমের রুটি ও পাস্তা ইত্যাদি। গাঢ় রঙিন ফল, গাজর, টমেটো, জাম, জামরুল, পেয়ারা, টক আপেল, আমড়া, কামরাঙা খেতে কোনো বারণ নেই। মিষ্টি ফলও খেতে পারেন, তবে অল্প পরিমাণে। কিছু ফল একত্রে মিশিয়ে এক কাপ পরিমাণ খেতে পারেন। এতে চিনির মাত্রার ব্যত্যয় হবে না খুব বেশি।
শর্করা, আমিষ কিংবা চর্বি
শর্করার মধ্যে ননস্টার্চ শর্করা কিংবা তন্তুজাতীয় শর্করা গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই। ডায়াবেটিস রোগী অবশ্যই আমিষ ও চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ করবেন। তবে সম্পৃক্ত চর্বি গ্রহণে সাবধান হতে হবে। যেসব চর্বি কম তাপমাত্রায় জমে যায়, সেগুলো গ্রহণে সাবধান হতে হবে। গরু কিংবা খাসির মাংসের চর্বি, ডালডা, নারকেল তেল ইত্যাদি এ পর্যায়ে পড়ে। মাছ, চামড়াবিহীন মুরগির মাংস, ননি তোলা লো-ফ্যাট দুধ, টক দই, পনির, বাদাম ইত্যাদি খেতে আপত্তি নেই।
বর্জন করুন
খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন চিনি, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজজাতীয় খাবার। মধু, ঘন কর্ন সিরাপ, প্রক্রিয়াজাত ঘন ফলের রস, ক্যান্ডি, কেক, জেলি, পেস্ট্রি ইত্যাদি গ্রহণে বিরত থাকুন। এগুলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা লাগামহীন করে দিতে পারে। কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। চর্বিযুক্ত মাংস, চামড়াসহ মুরগির ফ্রাই, ঘি, চিংড়ি, ডালডা, চর্বি থেকে যতটা সম্ভব নিজের রসনাকে সংযত রাখতে হবে। খাদ্য প্রস্তুতিতে স্বাস্থ্যসম্মত তেল ব্যবহার করতে হবে। তা হলো সূর্যমুখী, বাদাম, জয়তুন, সবজি কিংবা ধানের তুষের তেল।
লেখক : লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, বরিশাল।
Leave a Reply