কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের দামের। এই ঊর্ধ্বগতিতে সব স্তরের মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য তা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারপরও টনক নড়ছে না সংশ্লিষ্টদের। সরকার ও সংশ্লিষ্টরা বারবার মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন পাওয়া যাচ্ছে না। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্রেতারা।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে যেটি বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। এ ছাড়া আলুর দাম উঠেছে ৬৫ টাকা প্রতি কেজি, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা বেশি। কমেনি কাঁচামরিচের দামও, বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, প্রতি কেজি কচু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৪০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৫০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, পটোল প্রতি কেজি ৫০ টাকা, কচুরলতি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কলা প্রতি হালি ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ এবং লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি কেজি দেশী রসুন ২০০-২২০ টাকা এবং আমদানি করা চায়না রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি দেশী বা বিদেশী আদা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৮৫ টাকা। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। দেশী ও আমদানি করা মসুর ডাল ১৫০ টাকা, আমদানি করা মোটা ডালের কেজি ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১৩০ টাকা, অ্যাংকর ডালের কেজি ৯০ টাকা।
অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির অভিযোগ করে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে করলা, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা। আর বাকি সবজিগুলোরও বাড়তি দাম। ৬০ টাকার নিচে বাজারে কোনো সবজি নেই। এত দাম দিয়ে সবজি কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যেদিন যখন ইচ্ছে সবজির দাম বেড়ে যাচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বিক্রেতারা বলছেন, আসলে আলুর সঙ্কট দেখা দেয়ায় পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুরে আলুর খুব সঙ্কট চলছে, পাওয়া যাচ্ছে না। এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। ঈদের বন্ধের মধ্যে বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ কম। এ কারণে কাঁচামরিচসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে দুই-এক দিনের মধ্যে বাজারে পণ্য সরবরাহ আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে জানান তারা।
গোশতের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি দেশী মুরগি ৬০০-৬৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকায়। আর প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়। বাজারে প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকায়। প্রতি কেজি খাসির গোশত ১০০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা এবং ছাগলের গোশত বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক কেজি শিং মাছ চাষের বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, মাগুর মাছ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, চাষের পাঙাস ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, মলা ৪০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ৮০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, কাচকি মাছ ৪০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ৮০০ টাকা, বাইম মাছ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশী কই ৮০০ টাকা, মেনি মাছ ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, আইড় মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, বেলে মাছ ৭০০ টাকা এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
Leave a Reply