মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রথম বিতর্কে জো বাইডেনের খারাপ পারফর্মেন্সে খোদ তার দলের সদস্যরাই হতাশ হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ তাকে সরিয়ে নভেম্বরের নির্বাচনের জন্য অন্য কাউকে প্রার্থী করার কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিবিসির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ড কেইটিকে লিখেছেন, এবারের বিতর্কের ফরম্যাট ছিল আমেরিকানদের জন্য তুলনামূলক ভালো। তবে সঞ্চালকরা তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করেননি এবং এটা ছিল জো বাইডেনের জন্য একটি খারাপ রাত।
তার অনেক জবাবই পরিষ্কার ছিল না। তাকে বয়স্ক মনে হচ্ছিল। তবে বিতর্কের দ্বিতীয় ধাপ তার জন্য কিছুটা ভালো ছিল এবং তিনি কিছুটা শক্তি পেয়েছিলেন। তবে এটা হতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের যারা মনোযোগ দিয়ে বিতর্ক দেখেছেন, তারা অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান স্টেফাইন মারফি বলেন, কিছু মূহূর্ত ছিল যেখানে বাইডেন তার বয়স তুলে ধরেছেন। তাকে বোঝাটা কষ্টসাধ্য ছিল। কিন্তু অন্যদিকে তার মতে ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছু মন্তব্য করেছেন যা সত্যি নয় এবং এগুলো সত্যতা যাচাই করা উচিত।
তিনি বলেন, তার উদ্বেগের জায়গা হলো নির্বাচনের ফল গ্রহণ করবেন কি-না তা বলতে ডোনাল্ড ট্রাম্প অনীহা দেখিয়েছেন।
সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান রোডনি ডেভিস বলেন, ‘বিতর্কটি ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিষ্কার জয়।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকাজুড়ে ডেমোক্র্যাটদের জন্য দুঃখজনক যে বিতর্কের ধরণটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সহায়তা করেছে।’
বিবিসির ম্যাডেলাইন হ্যালপার্টকে দেয়া সাক্ষাতকারে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর কোরউইন স্মিডট বলেন, ‘বাইডেন তার অনেক দুর্বলতা দেখিয়েছেন এবং খুব বেশি শক্তির জায়গা দেখাননি।
ভিজুয়াল, কণ্ঠ ও জবাব দেয়ার গতির কারণে তাকে অনুসরণ করাটা কঠিন ছিল।
তিনি বলেন, ‘অনেক তথ্যভিত্তিক জবাব ও পয়েন্ট প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিয়েছেন। কিন্তু বলার ধরনের কারণে সেগুলো দ্রুত হারিয়ে গেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাম্পের পারফরমেন্স থেকেও অনেকে বেশি শক্তির জায়গা পাওয়া যায়নি এবং তিনিও কিছু দুর্বলতার প্রদর্শন করেছেন।’
প্রফেসর স্মিডট বলেন, ‘প্রশ্নের জবাবে তার উত্তরগুলো দৃঢ় ছিল না। কিন্তু উত্তরগুলো তার ভোটারদের কিছু উদ্বেগ ও ইস্যুকে স্পর্শ করে গেছে। তার সমর্থকরা তাকে চার বছর আগের প্রার্থীর মতোই দেখতে চায়।’
এমন প্রেক্ষাপটে বারাক ওবামার আমলের হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তা ডেভিড আক্সেলরড সিএনএনকে বলেছেন, বাইডেন নির্বাচনী প্রচারণা অব্যাহত রাখবেন কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
তবে বাইডেনের জন্য সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো, তিনি এখনো ডেমোক্র্যাট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সমর্থন পাচ্ছে। তাছাড়া তিনি নিজে থেকে সরে না দাঁড়ালে তাকে বদল করা প্রায় অসম্ভব। এছাড়া বাইডেনকে বাদ দিয়ে সামনে আনার মতো পরিচিত এবং বেশ গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রার্থীও নেই।
বাইডেন সরে গেলে বা তাকে সরিয়ে দেয়া হলে তার স্থানে প্রার্থী হতে পারেন গ্যাভিন নিউজসম বা গ্রেটচেন হুইটমার।
তবে ইতোমধ্যেই নিউজম জানিয়েছেন, তিনি বাইডেনের প্রতি দেয়া সমর্থন কখনো প্রত্যাহার করবেন না।
সূত্র : সিএনএন, বিবিসি এবং অন্যান্য
Leave a Reply