বাংলাদেশ পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ রাষ্ট্রীয় প্রাধিকারপ্রাপ্ত ১০টি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা বর্তমানে প্রতি কেজি চাল ও গম কিনেন ২ টাকা ১০ পয়সা ও ১ টাকা ৮০ পয়সা দরে। আগামী ১ জুলাই থেকে এই পণ্য সামগ্রি কিনতে তাদের খরচ করতে হবে যথাক্রমে চালের ক্ষেত্রে ১১ টাকা ও গমের ক্ষেত্রে ৯ টাকা কেজি। দাম বৃদ্ধির হার ৪শ’ ভাগের বেশি।
এ সব সংস্থার জনবলের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে রেশনসামগ্রী বিতরণের ক্ষেত্রে চাল ও গমের বিক্রয়মূল্য পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার।
পুনর্নির্ধারিত দর অনুযায়ী, চাল ও গমের বিক্রয়মূল্য হবে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের চাল ও গমের সরকার নির্ধারিত অর্থনৈতিক মূল্যের ২০ শতাংশ। চাল ও গমের বিক্রয়মূল্যের এ পুনর্নির্ধারিত হার আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগ থেকে প্রতি অর্থবছরের শুরুতে চাল ও গমের অর্থনৈতিক মূল্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবহিত করা হবে বলে পরিপত্রে বলা হয়েছে।
প্রাধিকারপ্রাপ্ত ১০টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতর (এনএসআই), সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (সেনা, নৌ ও বিমান), বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা অধিদফতর, দুর্নীতি দমন কমিশন, কারা অধিদফতর, বেসামরিক প্রতিরক্ষা এবং অগ্নিনির্বাপণ অধিদফতর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
জানা যায়, মরহুম সাবেক রাষ্ট্রপতি এ এইচ এম এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৮২-৮৩ সালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রথমবারের মতো রেশন সুবিধা চালু করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জনবলকে এই সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে।
জানা যায়, ইতঃপূর্বে ১৯৯১ সালে সর্বশেষ রেশন পণ্যের দাম নির্ধারণ করেছিল সরকার। এ দিকে রেশনে বিতরণ করা অন্যান্য পণ্য যেমন- চিনি, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেলের বিক্রয়মূল্যও পুনর্নির্ধারণ করা হবে কি না- সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
অর্থ বিভাগ সূত্র মতে, বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রতি টন চালের অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫১,৮৯৪.৫৮৯ টাকা এবং প্রতি টন গমের অর্থনৈতিক মূল্য ৪৭,৩০২.১৪০ টাকা।
জানা যায়, রেশন সুবিধার আওতায় পরিবারের আকারভেদে একেকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী একেক দামে রেশন সুবিধা পাচ্ছেন। বিভিন্ন সংস্থার জনবল অবসরে যাওয়ার পরও আজীবন রেশন সুবিধা ভোগ করছেন। সংস্থাভেদে চার সদস্যের একটি পরিবার প্রতি মাসে ১.০৯ টাকা থেকে ১.৮০ টাকা দরে ৩৫ কেজি চাল ও ৩০ কেজি করে আটা পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া প্রায় ৩ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চিনি, ১.২০ টাকা দরে ৮ কেজি মসুর ডাল এবং ২.৩০ টাকা দরে ৮ লিটার সয়াবিন তেল পান। বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা বর্তমানে ১.২০ টাকা কেজি দরে চাল ও আটা পাচ্ছেন।
অর্থ বিভাগ সূত্র মতে, সরকার দেশের ভেতর থেকে বাজার মূল্যে কিনে কিংবা বিদেশ থেকে আমদানি করে এসব পণ্য রেশন হিসেবে বিতরণ করে। এ খাতে সরকারকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করতে হচ্ছে। চাল ও গমের দাম কিছুটা বাড়ানোর কারণে ভর্তুকির পরিমাণ কমবে।
প্রসঙ্গত, আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্য ভর্তুকি বাবদ সাত হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
Leave a Reply