যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির প্রসিকিউটররা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের বেশিভাগের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন। গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধ থেকে মুনাফা লাভকারী কোম্পানিগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবিতে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন দখল করার পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছিল।
গত এপ্রিলে যে ৪৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের মধ্য থেকে ৩১ জনের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস ‘আইনগত বিবেচনা এবং প্রমাণের অভাবে’ ৩১ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানায়।
প্রসিকিউটররা জানান, বাকি ১৪ বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোও প্রত্যাহার করা হবে এই শর্তে যে তারা আগামী ছয় মাসের মধ্যে গ্রেফতার হতে পারবে না।
তবে বিক্ষোভকারীরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। উভয়পক্ষের আগামী ২৫ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে।
পুলিশ যাদের আসামি করেছে, তাদের কারো বিরুদ্ধেই আগের কোনো অপরাধের ইতিহাস নেই। তাদের সকলের বিরুদ্ধে অনধিকারচর্চার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া সকল শিক্ষার্থীকে সাসপেন্ড এবং তাদেরকে বহিষ্কার করার কথাও জানায় কর্তৃপক্ষ। এসব হুমকি এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি।
ইসরাইলবিরোধী এবং গাজার প্রতি সংহতি প্রকাশ করে হওয়া ছাত্র বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল কলম্বিয়া।
গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসকেরা পুলিশকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিটি কলেজ অব নিউ ইয়র্ক (সিসিএনওয়াই)-এর ক্যাম্পাগুলো থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়। পুলিশ এ সময় প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশ বেশ কয়েজকন বিক্ষোভকারীর ওপর চড়াও হয়, তাদেরকে এমনকি চিকিৎসাসেবা নিতেও বাধা দেয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাসের হ্যামিল্টন হল দখল করার পর পুলিশের অভিযানটি হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা এর নতুন নাম দিয়েছিল ’হিন্দ হল।’ ফেব্রুয়ারিতে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক আক্রমণে নিহত ৬ বছরের এক ফিলিস্তিনি মেয়ের নামে করা হয়েছিল ওই নামকরণ।
আরেকটি কারণেও কলম্বিয়া ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল। স্কুলের আইনবিষয়ক জার্নালে গাজায় গণহত্যার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা এবং ফিলিস্তিনি ইস্যুটিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার আহ্বান জানানোর কারণে কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেয়।
গত মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ১৩টি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সকল আর্থিক, কর্মসূচিগত এবং একাডেমিক সমর্থন’ স্থগিত রাখার একটি চিঠিতে সই করে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি গণহত্যা, বর্ণবিদ্বেষ এবং দখলদারিত্ব থেকে মুনাফা বা তহিবল লাভকারী কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা।
ওই চিঠিতে ২,২০০-এর বেশি সইকারী রয়েছে।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই, টাইমস অব ইসরাইল
Leave a Reply