কলকাতার নিউটাউনে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার খুনের তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, টানা ১২ দিন নিউমার্কেটের একটি হোটেলে গা ঢাকা দিয়ে বাংলাদেশের সংসদ সদস্যকে খুনের ছক কষে খুনিরা। ২রা মে খুনের দুই অভিযুক্ত ফকির মহম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও শাজি ফয়জল আলি মধ্য কলকাতার নিউ মার্কেটের সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলের ১২এ রুমে ওঠে। হোটেলের ম্যানেজার বিক্রম শর্মা জানান, দোতলায় দেড় হাজার টাকার ঘর ভাড়া নেয় তারা। তারা সকালে বের হতো। হোটেলে ফিরত সন্ধ্যার পর। খাওয়াদাওয়া করত বাইরে। দিন কয়েক পর তারা একটি হুইলচেয়ার কিনে নিয়ে এসে জানায়, নিজেদের এক অসুস্থ আত্মীয়ের জন্য এটি কিনেছে তারা। আনোয়ারুলকে খুনের পর সন্ধ্যায় ফয়জল ফের সদর স্ট্রিটের হোটেলে ফিরে আসে। জানা গেছে, খুনের পর দেহাংশের পচন ও দুর্গন্ধ ঠেকাতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়।
দেহ টুকরো টুকরো করে কিমা করা হয়। সেই দেহাংশ ফ্ল্যাটের ভিতরেই ফ্রিজের মধ্যে রাখা হয়। হাড়-মাংস আলাদা করা হয়। সেই দেহাংশ বিভিন্ন ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যাতে সন্দেহ না হয়, তার জন্য মাংসে রান্নার মশলাও মেশানো হয়। গত ১৩ মে তাকে খুনের পর সন্ধ্যায় নিউ মার্কেটের ওই হোটেলে ফিরে আসে খুনিরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে চেক আউট করে আনারের দেহাংশ ভর্তি ট্রলি নিয়ে তারা চলে যায় বনগাঁ সীমান্তে। ১৭ই মে ফের শহরে ফিরে নিউ মার্কেটেরই একটি শপিংমল থেকে নতুন ট্রলি কেনে দুই খুনি। ১৯শে মে তারা ফিরে যায় বাংলাদেশে। পুলিশের ধারণা, প্রথমে খুনের পর দেহটি হুইলচেয়ারে বসিয়ে পাচার করার ছক করেছিল তারা। পরে ছক পাল্টে সাংসদের দেহ টুকরো টুকরো করে পাচার করে। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, দুই ধাপে সরানো হয় দেহাংশ। দেহ লোপাট করতে একটি সাদা রঙের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল। ৩০ এপ্রিল অনলাইন রেন্টালের মাধ্যমে ওই গাড়িটি ভাড়া করা হয়। এই ঘটনায় ধৃত জিহাদ তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করছে। দেহ কোথায় ফেলেছে সে ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দিনভর একাধিক জায়গার কথা বলেছে সে । এখনও কোনও জায়গাতেই দেহের টুকরো মেলেনি। দেহাংশ যাতে না মেলে সেজন্যই তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
Leave a Reply