কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র্যাব হেফাজতে সুরাইয়া খাতুন (৫২) নামের এক নারী আসামির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৭টায় আটক সুরাইয়া খাতুনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আটকের বিষয়টি র্যাব সাংবাদিকদের জানান। পরদিন শুক্রবার সকাল ১০টায় তাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গতবছর নান্দাইল থানায় যৌতুকের দাবিতে স্বামী, শাশুড়ি ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্বা গৃহবধূ রেখা আক্তারকে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়। পরে এ মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকলে গত বৃহস্পতিবার রাতে আলাদা আলাদা স্থান থেকে স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে র্যাব ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরে রাত ১২ টা ৪৬ মিনিটে সাংবাদিকদের ম্যাসেজ দিয়ে জানানো হয় শুক্রবার সকাল ১০টায় আসামিদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।
কিন্তু সকাল ৭টায় হঠাৎ আসামি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সুরাইয়া খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সুরাইয়া খাতুনের স্বামী আজিজুল ইসলাম মোবাইলে বলেন, ‘রেখা আক্তার আত্মহত্যা করেছেন। তারপরও তার পরিবার আমাদের নামে মামলা করেছে। আমরা আইনিভাবে মোকাবেলা করব। শুক্রবার রাতে নান্দাইল থানায় পুলিশ ডেকে নিয়ে র্যাবের হাতে সুস্থ অবস্থায় আমার স্ত্রী ও ছেলেকে তুলে দিল। খবর পেলাম রাতেই মারা গিয়েছে আমার স্ত্রী। র্যাব নির্যাতন করে আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে।’
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৭ টায় র্যাব সদস্যরা সুরাইয়া খাতুন নামের এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাকে আনার পর কর্তব্যরত ডাক্তার বিনিত দাস তাকে মৃত ঘোষণা করে। মূলত মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল।’
ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফাহিম ফয়সাল জানান, এ ঘটনায় র্যাব হেডকোয়াটার থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে র্যাব হেফাজতে থাকা নারী আসামি সুরাইয়া বেগমের মরদেহের সুরতাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
Leave a Reply