মাছ গোশতের দাম বৃদ্ধির ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ প্রোটিনের চাহিদা পূরণে ভরসা রাখছিল ডিমে। গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। এরপর বাড়তে বাড়তে গতকাল শুক্রবার এটি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় এসেছে ঠেকেছে। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের। কিছুদিন পর পরেই এভাবে ডিমের দাম বৃদ্ধিতে সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, ভোক্তা অধিকারের অভিযানের কারণে কিছুদিন আগে ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেন আড়তমালিকরা। যে সময় সারা দেশে ডিম হিমাগারে মজুদ হয়েছে। এখন দাম বাড়িয়ে তারা মুনাফা করছে।
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সারা দেশে মেসেজের মাধ্যমে তারা (তেজগাঁও আড়তমালিকরা) ডিমের দাম নির্ধারণ করে। হুট করে তারা দাম কমিয়ে দিয়ে খামারিদের থেকে ডিম নিয়ে হিমাগারে সংরক্ষণ করে, এরপর আবার দাম বাড়িয়ে এ সিন্ডিকেট মুনাফা লুটছে। ঢাকার আড়তগুলোতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম বিক্রি হলেও তারা সারা দেশে বিক্রীত চার কোটি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে। প্রতিদিন তারা মেসেজ দিয়ে বাজারদর জানিয়ে দেয় সারা দেশে থাকা আড়তদারদের। তারা এখন ডিমের বাজারে সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, খুচরা বাজারে গতকাল ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৪৪ থেকে ১৫০ টাকা, গত সপ্তাহে বিক্রি করা হয় ১৩৫ থেকে ১৪১ টাকায়।
সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। সরবরাহ কমার অজুহাতে বিক্রেতারা বেশির ভাগ সবজির দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। বেগুন মানভেদে কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা ও করলার কেজি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি কেজি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১২০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায় ও কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আগের বাড়তি দামেই দেশি পেঁয়াজ কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দেশি রসুন বিক্রি করা হচ্ছে কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় এবং আমদানীকৃত রসুন কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায়।
অপরিবর্তিত আছে মুরগির দাম, ব্রয়লার ২১০ থেকে ২২০ টাকা এবং সোনালি মুরগির কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার সস্তা মাছ বলে পরিচিত পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়াও ২০০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি হচ্ছে না। ছোট পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় পাঙ্গাশ ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। ছোট তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। ছোট রুই (নলা) প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, মাঝারি রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং বড় রুই ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের কাতল মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। ছোট ও মাঝারি মাছের মধ্যে পাবদা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের কই মাছ ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, চাষের শিং আকারভেদে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা।
Leave a Reply