সমলিঙ্গ বিবাহে আশীর্বাদদানকে সমর্থনের চার মাস পর লিঙ্গ-পরিবর্তন, লিঙ্গ বিষয়ক তত্ত্ব বা মতবাদ ও সারোগেট অভিভাবকত্ব, সেইসাথে গর্ভপাত ও নিষ্কৃতি মৃত্যুর বিরোধিতায় আগের অবস্থান সোমবার বজায় রাখল ভ্যাটিকান।
এলজিবিটি-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভ্যাটিকানের অবস্থানের বিরুদ্ধে রক্ষণশীলদের, বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশে, তীব্র চাপের পর ভ্যাটিকানের মতবাদ বিষয়ক দফতর বা ডিডিএফ ‘ডিগনিটাস ইনফিনিটা’ (অসীম মর্যাদা) শীর্ষক ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে।
মানুষের মর্যাদার জন্য কোনো বিষয়কে হুমকি মনে করে গির্জা তা বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে এই নতুন ঘোষণাপত্রে। তবে সমলিঙ্গ বিবাহে আশীর্বাদদান নিয়ে বিতর্কের সরাসরি জবাবে এই নয়া পত্র প্রস্তুত করা হয়েছে কিনা তা নিয়ে কোনো ইঙ্গিত নেই। এই ঘোষণাপত্র তৈরি করতে দীর্ঘ পাঁচ বছর সময় ব্যয় হয়েছে। এই সময়কালে ব্যাপক মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে গেছে এটি।
ডিডিএফের প্রধান কার্ডিনাল ভিক্টর ম্যানুয়েল ফার্নান্ডেজ এক বিবৃতিতে বলেন, পোপ ফ্রান্সিস এই ঘোষণাপত্রকে অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি বিনীতভাবে জানিয়েছেন যে এই পত্রে ‘দারিদ্র্য, অভিবাসীদের অবস্থা, নারীবিরোধী সহিংসতা, মানবপাচার, যুদ্ধ ও অন্যান্য বিষয়’ও উল্লিখিত হয়েছে।
এই ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, সারোগেট অভিভাবকত্ব কার্যত সারোগেট মা ও ওই শিশুর মর্যাদাকে লঙ্ঘন করছে। পাশাপাশি স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে, জানুয়ারি মাসে ফ্রান্সিস একে ‘ঘৃণ্য’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
লিঙ্গগত মতাদর্শ বিষয়ে এই ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘মানবজীবন একটা উপহার- এই মৌলিক সত্যকে অস্বীকার করে লিঙ্গতত্ত্ব ব্যক্তিগত লিঙ্গ-নির্বাচনের কথা বলে যা নিজেকে ঈশ্বর দাবি করার প্রাচীন মোহেরই পুনরাবৃত্তি। প্রকৃত ভালোবাসার ঈশ্বরকে নিয়ে প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করার কথা গসপেল আমাদের জানিয়েছে।’
লিঙ্গ-পরিবর্তন নিয়ে ঘোষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি সৃষ্টি হওয়ার মুহূর্তে যে স্বতন্ত্র সত্তা বা মর্যাদা লাভ করেছে, লিঙ্গ-বদলের জন্য কোনোরকম হস্তক্ষেপ সেই মর্যাদার জন্য হুমকিস্বরূপ।’
এই ঘোষণাপত্রে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে, ‘যৌনাঙ্গের সমস্যা’ সমাধানের জন্য কোনো ব্যক্তি অস্ত্রোপচার করতে পারেন। কিন্তু এতে পাশাপাশি জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ‘এমন চিকিৎসাগত প্রক্রিয়ায় লিঙ্গ-বদল করা যাবে না; সেটাই এই পত্রের অভিপ্রায়।’
একইসাথে এই পত্রে বলা হয়েছে, ‘কিছু ক্ষেত্রে যৌন প্রবণতা ও পরিচয়ের কারণেই বহু মানুষ বন্দি, নির্যাতিত, এমনকি সুন্দর জীবন থেকে বঞ্চিত’, এটি মানবিক মর্যাদার পরিপন্থী, তাই একে নিন্দা করা হয়েছে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
Leave a Reply