বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা, অস্ত্র ও টাকা লুটের ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে রুমায় তিনটি ও থানচিতে একটি মামলা। থানচি বাজারে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সব বন্ধ রয়েছে। তবে রুমার পরিস্থিতি আগের চাইতে কিছুটা ভালো হলেও জনমনে আতঙ্ক এখনো কাটছে না।
শুক্রবার সকালে এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে সন্ত্রাসী হামলা, ভীতি প্রদর্শন, অস্ত্র, গুলি ও টাকা লুটের ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে।
বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী মামলা দায়েরের কথা জানান।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো: সৈকত শাহীন জানান, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পুলিশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি টহল বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, শনিবার এলাকা পরিদর্শনে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি রুমা সোনালী ব্যাংক পরিদর্শন করবেন। এছাড়া জেলা সদরে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে মতবিনিময় সভা করবেন।
এদিকে শুক্রবার বেলা ১১টায় বান্দরবান জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) আগামীতে আরো বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সাথে তাদের নির্মূলে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, নিজেদের কৌশল অবলম্বন করে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করেছে র্যাব। ব্যাংক ম্যানেজারের ল্যাপটপ ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা সাইবার হামলার চালাতে চেয়েছিল।
খন্দকার আল মঈন বলেন, র্যাবের নিজস্ব কৌশলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় রুমা থেকে অক্ষত অবস্থায় ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের পর পাহাড় ও ঝিরি পথে দীর্ঘক্ষণ হেঁটে তাদের আস্তানায় নিয়ে যায় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় অভিযানে নামে র্যাব। একটানা ৩০ ঘণ্টা অভিযানের পর কেএনএফ সন্ত্রাসীরা র্যাবের পাতা ফাঁদে পা দেয় এবং অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে মোটরসাইকেলে করে রুমার একটি জায়গায় রেখে চলে যায়। সেখান থেকে র্যাব তাকে উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাংক ম্যানেজারকে জীবিত উদ্ধারের কারণে আমরা হার্ড লাইনে যাইনি। তবে আজকে থেকে আমরা সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করব বিভিন্ন বাহিনীর সহযোগিতায়।’
তিনি বলেন, কেএনএফ সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো তারা আরো বড় ধরনের হামলা করতে পারে। সন্ত্রাসীদের ছাড় দেয়া হবে না, সিসিটিভি ফুটেজ শনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
Leave a Reply