ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার মানুষের রোজা এবার চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে কাটছে। খাদ্য, পানীয় ও চিকিৎসাসামগ্রীর তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। খেয়ে না খেয়ে রোজা থাকার পর ইফতারি করার জন্যও তারা চেয়ে থাকেন আকাশপানে, কখন আসবে ত্রাণ! ত্রাণ সংগ্রহের চেষ্টায় বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন।
গাজার বাসিন্দা আহমেদ তাফেশ বলেন, ‘আজ সকালে ত্রাণ পেতে দুইবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সফল হইনি। ইফতারের খুব বেশি সময় বাকি নেই। এর মধ্যে আরও দুয়েকবার চেষ্টা করব। আশা করছি ইফতারের জন্য কিছু একটা পেয়ে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘অধিকাংশ মানুষের অবস্থাই আমার মতো। তাদের কাছে খাবার কিছু নেই। খাবার না পেতে পেতে তাদের শরীরে আর শক্তিও অবশিষ্ট নেই। ফলে ত্রাণ সংগ্রহে গিয়ে অনেকেই মারা যাচ্ছে।’
জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেন, ‘আমি যখন মাত্র এক সপ্তাহ আগে গাজা উপত্যকায় আসি, তখন সেখানে শত শত ট্রাকভর্তি ত্রাণ সীমান্তের ওপারে অপেক্ষা করতে দেখেছি। কিন্তু সেগুলো গাজায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’
মূলত ইসরায়েলি বাধার কারণেই সেগুলো গাজায় ঢুকতে পারছে না। এ অবস্থায় কোনো কোনো দেশ আকাশপথে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করছে। এ ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়েও এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন মারা গেছে। তারপরও এ ত্রাণের জন্যই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে সবাই।
গাজায় এখন এক কথায় দুর্ভিক্ষ চলছে। সেখানে খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসাসামগ্রী কোনো কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে জিনিসপত্রের দাম সেখানে আকাশচুম্বী হয়ে ওঠেছে। এক কেজি চিনির দাম ২৭ ডলারে উঠেছে। বাংলাদেশের হিসেবে যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দামই সেখানে আকাশ ছুঁয়েছে। তারপরও চাইলেই সব কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।
এ অবস্থাতেই রোজা পার করছে গাজাবাসী। আগামী দিনে যুদ্ধবিরতি হলে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হতে পারে। নইলে ঈদও তাদের এভাবেই কাটবে, ত্রাণের আশায় আকাশের দিকে চেয়ে!
Leave a Reply