বিশ্ববাসী গাজায় হত্যা বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ড দেখছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৪ মার্চ) সফররত ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন দলের মহাসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেব্রিল আলরজব প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে একথা বলেন শেখ হাসিনা।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একইসাথে গাজায় নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষকে হত্যা এবং হাসপাতালে ইসরাইলি বাহিনীর হামলার নিন্দা জানান তিনি।
তিনি গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন এবং সেখানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিসরের মাধ্যমে দুইবার ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি যখনই সুযোগ পাই তখনই ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে আমার কণ্ঠ তুলে ধরি।’
১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইয়াসির আরাফাতের বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলার বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর নীরব থাকার অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এটা এক ধরনের ভণ্ডামি।
শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের স্বার্থে এটা করা উচিত।’
এ প্রসঙ্গে তিনি পূর্ব জেরুসালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন ও আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ফাতেহ মুভমেন্টের নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরিল আলরজব।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এজন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া।
তিনি বলেন, ‘গাজায় খাদ্যের তীব্র সঙ্কট বিরাজ করছে এবং জনগণ অনাহারে রয়েছে। সেখানে খাদ্য সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়াই এই সঙ্কট সমাধানের একমাত্র পথ।
তিনি বলেন, আরব দেশগুলোতে ৪০ কোটি মানুষ বসবাস করলেও তারা ঐক্যবদ্ধ নয়।
তিনি বলেন, ‘তারা ঐক্যবদ্ধ হলে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন সহজেই বন্ধ হবে। আরব বিশ্বের ক্ষমতা ও সম্পদ রয়েছে এবং ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য তাদের মধ্যে কেবল ঐক্য প্রয়োজন।’
তিনি আরো বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ না হলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শান্তি কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না।
অধিকৃত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে ইসরাইলের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনে সমর্থন জানানোর জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একটি চিঠিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।
সূত্র : ইউএনবি
Leave a Reply