1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন

রমজানে দুধের লিটার ১০ টাকা!

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪

পবিত্র রমজান উপলক্ষে ১০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি করছে কিশোরগঞ্জের জেসি এগ্রো ফার্ম। জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের জন্য এই সুবিধা দেয়া হয়েছে বলে খামারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে একজন ক্রেতা এক দিনে সর্বোচ্চ এক লিটার দুধ সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন খামারটির মালিক এরশাদ উদ্দিন।

রোজার মাসে ব্যবসায়ীরা যখন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা করে, সেখানে বিপরীত উদাহরণ তৈরি করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এরশাদ উদ্দিন বলেন, ‌‘আমি ক্ষুদ্র মানুষ, আমার ক্ষমতাও ক্ষুদ্র। অন্য বছরের মতো এবারো রমজানের ৩০ দিনে ২ মেট্রিক টন দুধ ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’

আজ মঙ্গলবার (পহেলা রমজান) থেকে এরশাদের জেসি এগ্রো ফার্মে এই দুধ বিক্রি শুরু হয়েছে। এরশাদ উদ্দিন ব্যবসায়িক কাজে এখন দেশের বাইরে আছেন। আগামীকাল বুধবার তিনি দেশে ফিরবেন। তার অবর্তমানে ফার্মের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুধ বিক্রি শুরু করেছেন।

গতকাল সোমবার বিদেশ থেকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘সবাইকে মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। আমি অফিসিয়াল কাজে ইন্ডিয়া আছি। দোয়া চাই, আর সবার জন্য দোয়া করি আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুক। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল (মঙ্গলবার) ১০ টাকা কেজি দুধ বিতরণ শুরু হবে। বিতরনের প্রথম দিনটি এবং যারা দুধ নিতে আসবেন সবাইকে মিস করব।’

এরশাদ উদ্দিন ফোনে নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমার এই উদ্যোগ বাহাবা নেয়ার জন্য নয়। আমার উদ্দেশ্য হলো সামান্য কিছুও যদি মানুষের জন্য করে যাই, মানুষ উপকার পাবে। এতে আল্লাহ খুশি হবেন। আমরা প্রত্যেকেই যেন সবার জায়গা থেকে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করি। তাহলে আমাদের দেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’

এরশাদ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুরের রৌহা গ্রামে। গত চার বছর আগে ওই গ্রামে জেসি এগ্রো ফার্ম গড়ে তুলেন তিনি। ফার্মটিতে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বর্তমানে পাঁচ শতাধিক গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। একইসাথে উন্নতজাতের ২৫টি গাভিও পালন করা হচ্ছে। গাভিগুলো প্রতিদিন ৭০-৭৫ লিটার দুধ দিচ্ছে। এই দুধই ১০ টাকা লিটারে রমজান মাসজুড়ে রোজাদারদের জন্য বিক্রি করছেন তিনি।

কম দামে দুধ বিক্রি করায় লোকসান গুনতে হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এরশাদ উদ্দিন বলেন, ‌‘শুধু অ্যাগ্রো ফার্ম নয়, আমার আরো কয়েকটি ব্যবসা আছে। সব ব্যবসা মিলেই আমার লাভ-লোকসানের হিসাব। অন্য চার ব্যবসায় আমার লাভ হচ্ছে। খামারে এক মাস দুধের দাম কমিয়ে দেয়ায় তেমন কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।’

এরশাদ বলেন, ‘দুধ একটি খাদ্যপণ্য। রোজায় খাবারের দাম কমিয়ে দেয়া ব্যবসায়ী হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব। মধ্যপ্রাচ্য এমনকি ইহুদী-খ্রিস্টানদের কয়েকটি দেশেও রোজার সময় মুসলমানদের জন্য খাবারের দাম কমিয়ে দেয়া হয়। অথচ আমাদের দেশে হয় উল্টোটা। আমি চাই আমার দেশ থেকে এই কু-চর্চার অবসান হোক।’

এরশাদ উদ্দিনের এই উদ্যোগটি এলাকায় ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছে।

মুড়িকান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শামসুদ্দিন বলেন, ‘রমজানে সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। মানুষ চাল-ডালই কিনতে পারছে না। বাজারে দুধের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা লিটার। এরশাদের উদ্যোগের কারণে মানুষের পাতে একটু হলেও দুধ পড়বে।’

পাশের গুণধর ইউনিয়নের খয়রত গ্রামের বাসিন্দা ও ঊষা ডেইরি ফার্ম অ্যান্ড এগ্রোর মালিক অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘এরশাদ সাহেবের উদ্যোগটা আমার ভালো লেগেছে। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা। আমিও ২০টি ষাঁড় গরু নিয়ে ছোট করে খামার শুরু করেছি। আগামীতে গাভী যোগ করব। এরশাদ সাহেবের মতো কম দামে দুধ বিক্রি করার চেষ্টা করব।’

এরশাদ উদ্দিন জানান, গত তিন বছর ধরে রমজান মাসে তিনি ১০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি করছেন। প্রথম দিকে খামারে গাভীর সংখ্যা কম ছিল। গত বছর রোজার মাসে দুই টন দুধ বিক্রি করেছিলেন। এবার খামারে গাভীর সংখ্যা বেশি থাকায় উদ্যোগটি বড় হয়েছে। এ বছর দুই টনের চেয়ে বেশি দুধ বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com