বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের মহামারীতে আক্রান্তের সংখ্যা কোটির ঘর ছাড়িয়ে গেল। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রায় সাত মাসের মাথায় গতকাল এ ভয়ালমাত্রা ছাড়িয়ে গেল। ওই দিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৫ লাখ। মহামারীর তথ্য হালনাগাদ রাখা ওয়ার্ল্ডওমিটারস ইনফোতে গতকাল রাত ৮টার দিকে বিশ্বে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা দেখাচ্ছিল- এক কোটি এক লাখ ২৯ হাজার ৯৯৭ জন। একই সময়ে মৃতের সংখ্যা দেখাচ্ছিল- পাঁচ লাখ দুই হাজার ২১০ জন। অন্যদিক বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন ৫৪ লাখ ৯৪ হাজার ৪২২ জন।
ভাইরাসটি গত বছর ডিসেম্বর মাসে চীনের উহানে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে কয়েক হাজার লোকের প্রাণ কেড়ে নিয়ে গোটা বিশ্বে লাখো মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের পর ভাইরাসটি আঘাত হানে ইউরোপের কয়েকটি দেশে। সম্প্রতি ইউরোপে প্রাদুর্ভাব কমলেও যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, প্রতি বছর বিশ্বে যত লোক মারাত্মক ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়, সাত মাসে মোটামুটি তার দ্বিগুণ মানুষকে সংক্রমিত করেছে নভেল করোনা ভাইরাস। আর করোনায় এ পর্যন্ত যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা এক বছরে ইনফ্লুয়েঞ্জায় মৃত্যুর প্রায় সমান। বিভিন্ন দেশের প্রকাশ করা সরকারি তথ্যের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছেÑ বিশ্বে এ পর্যন্ত যত রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার ২৫ শতাংশ করে হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপে। এ ছাড়া ১১ শতাংশ রোগী এশিয়ার ও ৯ শতাংশ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর।
এদিকে ভাইরাসটির সংক্রমণ এমন সময় এক কোটির ঘরে পৌঁছাল যখন প্রায় সব দেশে এর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে বা হচ্ছে। মার্চের মাঝামাঝি সময়ে দুই শতাধিক দেশে সংক্রমণ শুরু হয়। সেই সময় দেশে দেশে লকডাউনসহ বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রয়োজন দেখা দেয়। বিশেষ করে দরিদ্র ও ঘনজনবসতি পূর্ণ দেশগুলো লকডাউন চালিয়ে নিতে হিমশিম খায়। এমন পরিস্থিতিতে একটি বিষয়ে স্পষ্ট হয় যে ‘করোনায় মৃত্যু, নয়তো না খেয়ে মৃত্যু’। এ কারণে অনেক দেশ লকডাউন তুলে নিয়ে সব কিছু চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এতে করোনা দমে যায়নি।
এদিকে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটির কবল থেকে রক্ষা পেতে কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। যদিও একশটির বেশিসংখ্যক ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কোনোটি বেশ আশাব্যঞ্জক হলেও কোনোটিই চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি।
Leave a Reply