মিষ্টি খেতে ভালোবাসেন না এমন লোক কমই আছেন। সরাসরি মিষ্টি না খেলেও বিভিন্ন খাবারের সাথে চিনি ঢোকে শরীরে। অনেকেই আছেন, যারা সচেতনভাবে চিনি ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ ওজন কমানোর ইচ্ছায়, কেউ আবার ডায়াবেটিসের ভয়ে চিনি খাওয়া ছাড়তে চাইছেন। কর্মব্যস্ত জীবনে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, ঘুমের ঘাটতি, অত্যধিক মানসিক চাপের কারণে শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক রোগব্যাধি। স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আরো একটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ হলো চিনি খাওয়ার অভ্যাস।
পুষ্টিবিদদের মতে, যারা ওজন কমাতে চাইছেন, তারা এক মাসের জন্য চিনি খাওয়া ছাড়লেই হাতেনাতে ফল পাবেন। চিনিতে থাকে কেবলমাত্র ক্যালোরি, এতে কোনো রকম পুষ্টিগুণ থাকে না। ছয় মাস চিনি ডায়েট থেকে সম্পূর্ণ বাদ দিলে ১০ থেকে ১৫ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলা যায়। এক চামচ চিনি খেলে ১৯ ক্যালোরি শরীরে যায়।
হঠাৎ করে চিনি খাওয়া ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবলেও কাজটা কিন্তু মোটেও সহজ নয়। মদ, সিগারেট, চায়ের মতো একেবারে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের উপর। তাই গোটা প্রক্রিয়াটাই করতে হবে ধাপে ধাপে।
ডায়েট থেকে চিনি বাদ দেয়ার অর্থ কেবল চা, কফি বা রান্নায় চিনি না মেশানো নয়। আরো বিভিন্ন রকম খাবারের সাথে শরীরে চিনি যেতে পারে। মিষ্টি, শরবত, প্যাকেটজাত ফলের রস, প্রক্রিয়াজাত খাবার- সবকিছুতেই লুকিয়ে আছে প্রচুর চিনি।
কিভাবে ছাড়বেন চিনি খাওয়া?
১) চিনি ও ক্রিম ছাড়া চা, কফি খেতে শুরু করুন।
২) বেশ কিছু প্যাকেটজাত খাবার যেমন পাউরুটি, সস্, দই, ফলের রস সবকিছুতেই চিনি থাকে। তাই এর বদলে হাতে বানানো রুটি, টাটকা ফলের রস বানিয়ে খান। যেকোনো প্যাকেটজাত খাবার কেনার আগে উপকরণ দেখে তবেই কিনুন। চিনির বদলে গুড় বা মধু থাকলেও সতর্ক হোন।
৩) কর্ন সিরাপ, ম্যাপেল সিরাপ, মধু, গুঁড়ো দুধ, গুড়, ব্রাউন সুগার- সবকিছুতেই চিনি থাকে। তাই এ সব খাবারও বন্ধ করুন।
৪) প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলেও সতর্ক হোন। প্রক্রিয়াজাত খাবারেও ভালো মাত্রায় চিনি থাকে। তাই এই সব খাবারও বন্ধ করতে হবে।
৫) চিনির সাথে সাথে অনেকে কার্বোহাইড্রেট যেমন ভাত, রুটি খাওয়াও বন্ধ করে দেন। তবে শারীরিক কার্যকলাপ পরিচালনার জন্য কিন্তু কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন। তাই পুষ্টিবিদর পরামর্শ ছাড়া কার্বোহাইড্রেট খাওয়া একেবারে বন্ধ করা উচিত নয়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
Leave a Reply