বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার পাঁচ লাখের বেশি মানুষের জন্য প্রতিদিন মাত্র চারটি করে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম। এ দুই উপজেলায় যে কারণে দিন দিন বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, আমতলী ও তালতলীতে গত ২ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ৫২৫টি নমুনা সংগ্রহ করে ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে একজনের ও সুস্থ হয়েছেন ২৪ জন। হোম আইসোলেশন ও হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৪ জন।
দুই উপজেলার স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছে, স্থানীয় জনসাধারণ করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে জরুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা, সামাজিক দূরত্ব না মেনে হাট-বাজারে ও চায়ের দোকানে অহেতুক আড্ডা দেওয়া এবং অধিকাংশের মুখে মাস্ক ব্যবহার না করার কারণে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে দুই উপজেলার মানুষ।
অপরদিকে প্রতিদিন দুই উপজেলায় মাত্র চারজনের করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হলেও বিশাল জনগোষ্ঠী থেকে যাচ্ছে পরীক্ষার বাইরে। আর এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে যারা এখনো করোনা পরীক্ষা করাতে সক্ষম হননি, তাদের মধ্যে অনেকেই অবাধে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মানুষের সঙ্গে মিশছেন। সংশ্লিষ্ট সচতেন মহলের ধারণা, তাদের মাধ্যমে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘আমতলী ও তালতলী উপজেলায় প্রতিদিন চারটি করে করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। দুই উপজেলায় গত ৮৫ দিনে এ পর্যন্ত ৫২৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে।’
এদিকে বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে বরগুনা জেলার করোনার নমুনা বরিশাল না পাঠিয়ে ঢাকার সাভারে অবস্থিত প্রাণীসম্পদ গবষেণা ইনস্টিটিউটে পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে একটি নির্দেশনামূলক চিঠি তাদের অফিসে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে প্রতিদিন জেলা থেকে মাত্র ২০টি করে নমুনা পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন শাহিন খান জানান, প্রতিদিন জেলা থেকে মাত্র ২০টি করোনার নমুনা নেওয়ার বিষয়টি প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। জেলা সদর থেকে সাভারের যে দূরত্ব তাতে প্রতিদিন সেখানে নমুনা পৌঁছানো অনকেটাই দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। এতে দীর্ঘ সময়ের কারণে করোনার নমুনা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন কম করে হলেও জেলা থেকে ১৫০ নমুনা পাঠানো প্রয়োজন।
Leave a Reply