1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

দ্রুত নিউইয়র্ক ফিরে যাব, কোনো অভিযোগ নেই

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২২ জুন, ২০২০

‘অবশেষে কোয়ারেন্টিন মুক্ত হলাম আমি। কেটে গেল ১৪টি দিন। সময়তো কাটবেই। থেকে যাবে কেবল স্মৃতি। এই মুহূর্তে কোনও অভিযোগ নয়, কেবল ধন্যবাদই দিতে চাই সবাইকে।’ কোয়ারেন্টিন শেষে বাসায় ফিরে কথাগুলো ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসা আলোচিত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌস খন্দকার। আবেগঘন ওই স্ট্যাটাসে ডা. ফেরদৌস আরো লিখেছেন, যারা গত ১৪টি দিন আমার সঙ্গে ছিলেন, তাঁরা বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়েছেন, মানসিকভাবে শক্ত থাকতে প্রেরণা জুগিয়েছেন। তবে একথা আমাকে বলতেই হবে যে, শুরুটা বেশ কঠিনই ছিল আমার জন্যে। আমার বিরুদ্ধে ‘অহেতুক’ এবং ‘মিথ্যা অভিযোগ’-এ বিরাট ঝড় উঠেছিল।

সব ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ঝড়ও হয়তো থেমে গেছে। যা বলছিলাম, দেশে আসার পর আমাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে দেওয়া হয়েছে; এই বিষয়টি আমি প্রথম পাঁচ দিন মানতেই পারছিলাম না। কেননা আমার অ্যান্টিবডির সনদ ছিল। তখন মানসিকভাবে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। পরিবার, সহকর্মী, বন্ধু, সুধীজন, ছাত্রলীগের সহযোদ্ধা, সাংবাদিক এবং দেশের মানুষের সহায়তা ও সমর্থণ আমাকে সাহস জুগিয়েছে।’

তিনি লিখেছেন, দেশে এসেছিলাম কয়েক সপ্তাহ দেশবাসীর জন্যে কাজ করবো বলে। সাথে ছোট্ট একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলে যাবো- এমন আশা ছিল। সেই লক্ষ্যেই দুই থেকে তিন সপ্তাহের জন্য এসেছিলাম। যদিও সময় কিছুটা ক্ষেপন হয়ে গেছে। এর পরও আমি মনে করি, কোনও আক্ষেপ নেই আমার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কিছুটা কাজ করে এবার চলে যেতে চাই। তবে সঙ্গে নিয়ে যাবো গত দুটি সপ্তাহে ঘটে যাওয়া অনেক কিছু ও অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে যেসব সৈনিক ভাইয়েরা আমার সঙ্গে ছিলেন, তাঁরা অনেক ভালোবাসা দিয়েছেন। অনেক সহযোগিতা করেছেন। আপনাদের মমতা কোনোদিন ভুলবার নয়। সেইসঙ্গে কুয়েত প্রবাসী কিছু ভাই শেষের দিকে কোয়ারেন্টিনে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের ভালোবাসায় ভরা স্মৃতিগুলোও বাকি জীবন আমার সঙ্গে থাকবে। কখনও যদি দেখা হয়, নিশ্চয়ই ভালো লাগবে; বুকে জড়িয়ে ধরবো আপনাদের। দেখা না হলেও, আপনাদেরকে আমার সবসময় মনে থাকবে।’

‘দেখুন আমি অতি সাধারণ একজন চিকিৎসক। তবে দেশকে, দেশের মানুষকে খুব ভালোবাসি। এসেছিলাম, দুর্যোগের এই সময়টায় কেবলই দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। কোনও রাজনৈতিক অভিলাষ বা ইচ্ছা আমার ছিল না; নেইও। ফলে যারা তেমনটি ভেবেছিলেন, আশা করছি আপনাদের ভুলটা ভেঙেছে। বাংলাদেশের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির যোদ্ধারা করোনার এই সময়টায় রীতিমতো জীবন বাজি রেখে লড়াই করছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ এই জাতি সবসময়ই মনে রাখবে। সামনের দিনগুলোতেও তাঁরা এমনিভাবে লড়ে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস।’

ডা. ফেরদৌস লেখাটির উপসংহার টেনেছেন এভাবে, ‘আমি এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিষয়ক ছোট্ট একটি সেটআপ করে দ্রুতই নিউ ইয়র্ক ফিরে যাবো। কারো বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। মায়ের বিরুদ্ধে সন্তানের কোনো অভিযোগ থাকে না। আমারো নেই। আবারো দেখা হবে। ভালোবাসা বাংলাদেশ। সবাই ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন। আপনাদের মঙ্গল হোক।’

গত ৭ জুন কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন ডা. ফেরদৌস। বিমানবন্দরে নামার পর তাঁকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়। করোনার এই সময়টায় নিউ ইয়র্কে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশাপাশি অনেক মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে আলোচিত হন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। নিজের ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে করোনা বিষয়ে নানান পরামর্শ দিয়ে তিনি পান বিপুল জনপ্রিয়তা।

একইসঙ্গে নিউ ইয়র্কে করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এবং মাতৃভূমিতে মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেশে এসেছেন বলে জানান ডা. ফেরদৌস। তবে দেশে পৌঁছলে তাঁকে ঘিরে শুরু হয় নানা সমালোচনা। এমন অভিযোগও তোলা হয়, খন্দকার মোশতাক ও কর্নেল রশিদের আত্মীয় ডা. ফেরদৌস। এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে তা প্রমাণের জন্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন এই চিকিৎসক। বিষয়টি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। আর অ্যান্টিবডির সনদ থাকার পরও, ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয় এই চিকিৎসককে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com