পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের সপ্তম চালান প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে।
পাকশি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আশিষ কুমার সান্যাল জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে।
ইউরেনিয়ামের সপ্তম চালানের গাড়ি বহর ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়।
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো আনার সময় মহাসড়কে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তাবলয় ছিল। নিরাপত্তার জন্য ভোর থেকে ইউরেনিয়াম প্রকল্প এলাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত পাবনা-নাটোর-কুষ্টিয়া, মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল সীমিত রাখা হয়। জ্বালানির চালান প্রকল্প এলাকায় পৌঁছানোর পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জ্বালানি নেয়া হয় প্রকল্প এলাকায়। ৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি হস্তান্তর করেন। এর মাধ্যমে পারমাণবিক ক্লাবে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।
প্রথম চালানের এক সপ্তাহ পর ৬ অক্টোবর (শুক্রবার) সকাল সোয়া ১০টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান ঢাকা থেকে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছায়। ১৩ অক্টোবর একই পথে ইউরেনিয়ামের তৃতীয় চালান এবং ২০ অক্টোবর চতুর্থ চালান রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়। ২৭ অক্টোবর পঞ্চম চালান ও ৩ নভেম্বর ষষ্ঠ চালান রূপপুর প্রকল্পে পৌঁছায়।
উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বৃহৎ প্রকল্প। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের ব্যয় ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। আর রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ-কেন্দ্রটি। আর ২০২৫ সালের মাঝামাঝি বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দু’টি ইউনিট চালু হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
Leave a Reply