1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন

ইসলামী সংস্কৃতি ও এর গুরুত্ব

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩

ইসলামী সংস্কৃতি : দুনিয়া এ আখিরাতের সমন্বয়ে ইসলামী সংস্কৃতি একটি আদর্শিক সংস্কৃতি। ইসলাম মানবজাতির সুষ্ঠু জীবনযাপনের যে নিয়মনীতি বা বিধিব্যবস্থা প্রণয়ন করে তার ব্যবহারিক দিকগুলোকে ইসলামী সংস্কৃতি বলা হয়।
অন্যভাবে বলা যায়, ইসলামী সংস্কৃতি বলতে সেই ভাবধারাকে নির্দেশ করে যা মহানবী সা: কর্তৃক প্রবর্তিত ইসলামী সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ইসলামী আচার-আচরণ, জীবনদর্শন, শিক্ষা, সাহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প, ব্যবসায়-বাণিজ্য সর্বোপরি মানবজীবনের সামগ্রিক ব্যবস্থায় ইসলামী পদ্ধতি অনুসারে জীবন পরিচালনা করা। মুসলমানদের অনুশীলিত ধর্মাচার, স্থানীয়, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম-পদ্ধতি, জীবনপ্রক্রিয়া ও ঐতিহ্যের যা কিছু ইসলামের নিয়মাবলি অনুমোদন ও প্রতিফলিত হয় সেগুলোকেই ইসলামী সংস্কৃতি বলে।

প্রখ্যাত মুসলিম দার্শনিক আল্লামা আবুল হাশিম তার ‘ক্রিড অব ইসলাম’ গ্রন্থে বলেন, ‘মানুষের শারীরিক ও মানসিক বৃত্তিগুলোর ইসলামী নীতি, আদর্শ ও শিক্ষাসম্মত উৎকর্ষসাধন পদ্ধতি এবং ব্যবহারিক জীবনে তার বাস্তব রূপ হলো ইসলামী সংস্কৃতি।’

ইসলামী সংস্কৃতির গুরুত্ব : মুসলিম উম্মাহর পরিচিত, অস্তিত্ব, স্বকীয়তা, জাতিসত্তা, স্বাতন্ত্র্য, সাফল্য- এসব কিছুই ইসলামী সংস্কৃতির অধ্যয়ন, অনুশীলন ও অনুকরণের ওপর নির্ভরশীল। মুসলিম জাতির সমগ্র জীবনে তাই ইসলামী সংস্কৃতির গুরুত্ব অসীম। যেমন-
১. ঈমানের পূর্ণতা সাধন : পারিভাষিক অর্থে, নবী করিম সা:-এর প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রণীত সব বিষয়ের প্রতি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মৌখিক স্বীকারোক্তি প্রদান ও সে অনুযায়ী আমল করাকে শরিয়তের পরিভাষায় ঈমান বলে। ইসলামী সংস্কৃতি হলো ঈমানের চূড়ান্ত পর্যায়। কেননা এখানে ইসলামের নীতি ও দর্শন বাস্তব রূপ লাভ করে। আর তাই ইসলামী সংস্কৃতি ঈমানের পূর্ণতা দান করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! তোমারা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে না।’ (সূরা আল বাকারা-২০৮)

২. ঈমান সংরক্ষণ : ইসলামী সংস্কৃতি সম্পূর্ণ ঈমানভিত্তিক। আর তাই এই সংস্কৃতি মুমিনের ঈমান অক্ষুণœ রাখার রক্ষাকবচ। তাওহিদ, রিসালাত, কিতাব, ফেরেশতা, আখিরাত প্রভৃতি বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন এবং ঈমান সংশ্লিষ্ট অনুশীলন এ সংস্কৃতির মূল উপাদান। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি আহলে কিতাবদের কোনো দলের অনুসরণ করো তাহলে ঈমান থেকে বিচ্যুত করে তারা তোমাদের কাফির হিসেবে প্রত্যাবর্তন করাবে।’ (সূরা আলে ইমরান-১০০)

৩. দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য অর্জন : ইসলামী সংস্কৃতি একই সাথে দুনিয়া ও আখিরাতমুখী। এতে দুনিয়ার জীবনকে উপেক্ষা বা অবজ্ঞা করা হয়নি; বরং যথার্থ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আখিরাতের জীবনকে বলা হয়েছে মূল বিবেচ্য বিষয়। এভাবে ইসলামী সংস্কৃতি অনুশীলন ও অনুকরণের মাধ্যমে ঈমানদাররা অর্জন করেন পার্থিব সাফল্য ও পরকালীন মুক্তি।

৪. আল্লাহ ও রাসূল সা:-এর ভালোবাসা লাভ : ইসলামী সংস্কৃতি মহান আল্লাহ তায়ালার বাণী ও রাসূল সা:-এর জীবনাদর্শভিত্তিক। এর প্রধান উৎস হলো আল কুরআন ও সুন্নাহ। তাই এই সংস্কৃতির অনুশীলন বলতে বোঝায় আল্লাহর নির্দেশ পালন ও রাসূল সা:-এর জীবনাদর্শের অনুশীলন। এটি অনুশীলনের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসূল সা:-এর প্রতি ব্যক্তির আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং তাঁদের ভালোবাসা লাভ করা যায়। আল্লাহ বলেন- ‘মুহাম্মদ সা: আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহর ভালোবাসা চাও তাহলে আমাকে অনুসরণ করো।’ (সূরা আলে ইমরান-৩১)

৫. মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্ব রক্ষা : সংস্কৃতি জাতির পরিচিতির প্রতীক। ইসলামী সংস্কৃতিতে মহান আল্লাহর বিধিবিধান ও রাসূল সা:-এর পরিচালিত জীবনব্যবস্থা অনুসারে পরিচালিত হয়। এগুলো ব্যতীত কোনো মুসলিম যদি অন্য কোনো জাতির সংস্কৃতি অনুসরণ করে তাহলে সে মুসলিম থাকে না। রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুসরণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ)
আর তাই ইসলামী সংস্কৃতি হলো মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্ব রক্ষার প্রধান উপায়।
সুতরাং বলা যায়, মুসলিম জাতির জীবনে ইসলামী সংস্কৃতি এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়; যা পালনের মাধ্যমে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ এবং মুক্তি লাভ করতে পারবে।

লেখক :

  • আন্জুমান আরা ঐশী

শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com